পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২২ থেকে ২৬ মে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি করবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতেও নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা। এবার প্রথমবারের মতো কমলাপুরের বাইরে পাঁচ স্থানে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করবে কর্তৃপক্ষ।
এর মধ্যে স্টেশনের বাইরে রাজধানীর ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট ও মিরপুর পুলিশ লাইনে বিক্রি হবে টিকেট। এ ছাড়া টিকেট মিলবে বিমানবন্দর, বনানী ও জয়দেবপুর রেলস্টেশনে।
৩৩টি আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে এবার যুক্ত হচ্ছে ১২টি স্পেশাল ঈদ ট্রেন। অতিরিক্ত যাত্রীবহনে ১৩৮টি যাত্রীবাহী বগিও সংযুক্ত করা হবে। ঈদ ফিরতি টিকেট বিক্রি হবে ২৯ মে থেকে ২ জুন।
এ বিষয়ে রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, সরকার রেলে ব্যাপক উন্নয়ন করছে। উন্নয়নের সুফল ও যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার তাই করব। দুর্ভোগ কমাতে কমলাপুর ছাড়াও পাঁচ স্থান থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করা হবে। কোনো যাত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। এবার আমরা ৫০ শতাংশ টিকেট অনলাইনে বিক্রি করব।
সুজন বলেন, ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রীবহনে ১২টি স্পেশাল ট্রেন ও ১৩৮টি যাত্রীবাহী কোচ প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। টিকেট কালোবাজারি রোধে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখানোর পরই টিকেট দেওয়া হবে। ঈদের সবকয়টি ট্রেন সিডিউল অনুযায়ী চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পর্যাপ্ত কাউন্টার খোলা হচ্ছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ২৩টি কাউন্টার খোলা হবে। প্রতিদিন সকাল ৮টায় টিকেট বিক্রি শুরু হবে।
তিনি বলেন, ২৫ এপ্রিল ঢাকা-রাজশাহী বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ১১৬টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে ১১১টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সচল রয়েছে। ঈদে আরও দুটি যুক্ত হবে। ঈদের তিন দিন আগে থেকে কনটেইনার ও জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন ছাড়া অন্য মালবাহী ট্রেন চলবে না। ঈদের দিন বিশেষ ব্যবস্থায় কয়েকটি মেইল ট্রেন চালানো হবে, তবে কোনো আন্তঃনগর নয়। ঈদের আগে ২৬ মে থেকে পার্বতীপুর-দিনাজপুর-পঞ্চগড় রুটে একজোড়া শাটল ট্রেন চলাচল করবে। চলমান ৩৩ আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন ২৫ হাজার ১৭৯টি। এর সঙ্গে যুক্ত হবে ১২টি স্পেশাল ট্রেনে ১৩৭টি কোচের আসন।
রেলওয়ের দুটি ওয়ার্কশপে বাড়তি বগি মেরামতের কাজ পুরোদমে চলছে জানিয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক কাজী রফিকুল আলম জানান, টিকেট কালোবাজারি রোধে রেল পুলিশের সঙ্গে থাকবে র্যাব, জেলা পুলিশ ও আর্মস ফোর্সেস। সবকটি বড় স্টেশনে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমরা এবারই প্রথম ট্রেনের টিকেট স্টেশনের বাইরে বিক্রি করতে যাচ্ছি। বিষয়টি বিরাট চ্যালেঞ্জ।
রেলওয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান বলেন, আগামী ৫ জুন পবিত্র ঈদুল ফিতর ধরে (সম্ভাব্য) ২২ মে থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করব। বিশেষ ব্যবস্থায় টিকেট বিক্রির স্থানগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফুলবাড়িয়া কল্যাণ ট্রাস্টে আমাদের একটি কাউন্টার রয়েছে। মিরপুর পুলিশ লাইনে বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম টিকেট বিক্রি হবে।
তিনি বলেন, ২২ মে ৩১ মে’র, ২৩ মে ১ জুনের, ২৪ মে ২ জুনের, ২৫ মে ৩ জুনের এবং ২৬ মে ৪ জুনের টিকেট বিক্রি করা হবে। আর ২৯ মে ৭ জুনের, ৩০ মে ৮ জুনের, ৩১ মে ৯ জুনের, ১ জুন ১০ জুনের এবং ২ জুন ১১ জুনের ফিরতি টিকেট রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি করা হবে।
আরএম-১৪/২৪/০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক)