নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিট মে মাসে

ফেনীর নুসরাতকে

ফেনীর আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিট আগামী মে মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। রোববার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

বনোজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল এসএম সিরাজ উদ দৌলাকে আমরা ফের পাঁচদিনের জন্য রিমান্ডে নিয়েছি। তার দেয়া তথ্যকে আমরা গুরুত্ব দেব। গতকাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। দেখি তিনি কী বলেন।’

‘এই ঘটনার মামলায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেজন্য অনেক ডকুমেন্ট (কাগজপত্র) নিয়ে মামলাটি রেকর্ড করতে আমাদের সময় লাগছে। আরও অনেক কাজও করতে হচ্ছে। যদি এর মধ্যে আর কোনো ঘটনা না ঘটে তাহলে আমরা এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী মে মাসের মধ্যে আমরা চার্জশিট দিয়ে দেবো।’

এরআগে গতকাল শনিবার আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিট খুব অল্প সময়ের মধ্যে দাখিল করার কথা জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান। তবে তিনি চার্জশিট দাখিলের সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ জানাননি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা পিবিআইয়ে হস্তান্তরের পর এখন পর্যন্ত মামলার এজহারভুক্ত আট আসামিসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে হত্যার দায় স্বীকার করে আটজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। নুসরাত হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের গ্রেফতার করছে পিবিআই। গ্রেফতারকৃত ও আদালতে জবানবন্দিতে দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বাকি অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এ মামলায় আদালতে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতার রয়েছেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, ইফতেখার হোসেন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, হাফেজ আবদুল কাদের ও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন।

বিএ-১৩/২৭-০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক)