১৫০০ টাকায় ঘর ভাড়া নেয় তারা

স্ত্রীদের নিয়ে ওঠার কথা বলে ১৫০০ টাকায় টিনশেড ঘর ভাড়া নেয় সম্ভাব্য দুই জঙ্গি। ঘর ভাড়া নেয়ার ক্ষেত্রে তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সিলযুক্ত ফরমও পূরণ করেনি। এমনকি বাড়িওয়ালাকে পরিচয়পত্রও সরবরাহ করেনি মোহাম্মদপুরের বছিলায় র‌্যাবের অভিযানে নিহত দুই জঙ্গি।

এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের এডিজি (অপারেশন) কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম। এর আগে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গি আস্তানায় কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। তিনটি পা দেখা গেছে। এখনও আস্তানায় আগুনে জ্বলছে।

কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম বলেন, র‌্যাবের অভিযানে সম্ভাব্য দুই জঙ্গি নিহত হয়েছেন। তারা মাত্র ১৫০০ টাকায় টিনশেডের ঘরটি ভাড়া নেন। সেখানে কেয়ারটেকার সোহাগ স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন।

‘কেয়ারটেকার সোহাগের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সুজন ও সুমন নামের দুই জঙ্গি ওই ঘরটি ভাড়া নেন। পরবর্তীতে স্ত্রীদের নিয়ে আসা হবে বলে তারা কেয়ারটেকার সোহাগকে জানায়।’

তিনি আরও বলেন, তারা (সম্ভাব্য দুই জঙ্গি) ঘর ভাড়া নেয়ার যে ফরম আছে সেটা পূরণ করেননি এবং তাদের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য কেয়ারটেকার সোহাগের কাছেও নেই। ঘর ভাড়া নেয়ার সময় তাদের একজন পেশায় বেসরকারি চাকরিজীবী এবং অন্যজন ভ্যানগাড়ির চালক হিসেবে পরিচয় দেন।

‘কেয়ারটেকার তাদের (র‌্যাব) জানিয়েছেন, সর্বশেষ তিনদিন ওই দুই জঙ্গি একসঙ্গে ওই ঘরে অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যে হয়তো তারা ওই ঘরে বিস্ফোরকদ্রব্য জড়ো করেন।’

কর্নেল জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, আমরা বাড়ির মালিক আব্দুল ওহাবের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছি। তিনিও জানিয়েছেন, ঘর ভাড়া নেয়া দুজনের একজন ভ্যানগাড়ির চালক বলে পরিচয় দেন। তারা তাদের নাম বলেন সুজন ও সুমন।

‘এটা তাদের আসল নাম না-ও হতে পারে। ছদ্মনামে তারা ঘর ভাড়া নিতে পারেন। আমরা তাদের আসল পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। এছাড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ এখানে কাজ করছে। তারা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও নমুনা সংগ্রহ করছেন। আশা করছি, আমরা তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারব।’

প্রসঙ্গত, জঙ্গি আস্তানা রয়েছে- এমন সন্দেহে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোহাম্মদপুর বছিলার মেট্রো হাউজিং এলাকায় অভিযান শুরু করে র‌্যাব সদস্যরা। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা সেখানে বিস্ফোরণ ঘটায়। ভোর ৫টার দিকে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

আস্তানাটি ঘেরাওয়ের পর কেয়ারটেকারসহ তিনজনকে আটক করেন র‌্যাব সদস্যরা। তারা হলেন- কেয়ারটেকার সোহাগ, সোহাগের বউ মৌসুমী ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইউসুফ।

সোমবার সকাল ৯টার দিকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে যায় র‌্যাবের বম্ব ডিসপোজাল দল। তারা সেখানে ছিন্ন-ভিন্ন দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেন।

র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জঙ্গি আস্তানায় কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। তিনটি পা দেখা গেছে। এখনও আস্তানায় আগুনে জ্বলছে।

নিহতদের পরিচয় জানতে চাইলে র‌্যাব ডিজি বলেন, আমরা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছি, পরবর্তীতে তাদের পরিচয় বলা যাবে। তবে এটা নিশ্চিত যে তারা জঙ্গি।

বিএ-০২/২৯-০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক)