ভারতের উপকূল থেকে ঘূর্ণিঝড় ফনি ঘনীভূত হয়ে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। আবহাওয়া অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে, আগামী ৪ মে এটি বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার থেকে অব্যাহতভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরবচ্ছিন্নভাবে নিজ নিজ স্টেশনে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের উপপরিচালক (প্রশাসন-১) উপসচিব লুৎফুন নাহার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এই নির্দেশ দেয়া হয়।
এ ছাড়া ঝড়ের কারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সব শাখাও বুধবার থেকে যথারীতি খোলা থাকবে বলে নোটিশে জানানো হয়। একই সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমও ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ফনির জন্য কন্ট্রোল রুমে অতিরিক্ত লোক বসানো হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফনি আরও ঘনীভূত হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ঝড়টি দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
এদিকে বুধবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, ভারতের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘ফনি’ আঘাত হানার পর কিছুটা দুর্বল হয়ে আগামী ৪ মে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। তাই এটি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় ফনির ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় দেশের উপকূলীয় ১৯টি জেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড়টি এ মুহূর্তে ভারতের উড়িষ্যার দিকে রয়েছে। আগামী ৪ তারিখে এটি বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।
অপরদিকে বুধবার আবহাওয়া অধিদফতর থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে চার নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত (পুনঃ) দেখাতে বলা হয়েছে।
এটি বুধবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৩৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৯০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৯৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১১০০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
বিএ-০৬/০১-০৫ (ন্যাশনাল ডেস্ক)