বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সংবাদ প্রচারের বিভিন্ন অংশে বাণিজ্যিক স্পন্সরের বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে বেসরকারি সব টেলিভিশন চ্যানেলকে এ রায় মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এক রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে সোমবার বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি শশাংক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
‘অমুক ব্যাংক বাণিজ্য সংবাদ’, ‘তমুক হাসপাতাল স্বাস্থ্য সংবাদ’- উদাহরণ দিয়ে আদালত বলেন, এ ধরনের কোনো টাইটেল স্পন্সর করে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কোনো সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মাসুদ আহমেদ সাঈদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবুল কাশেম ও শেখ তাহসান আলী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। চ্যানেল ২৪ এর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসাদুল ইসলাম।
বেসরকারি টেলিভিশনগুলোয় সংবাদ প্রচারের বিভিন্ন অংশে বাণিজ্যিক স্পন্সরের বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেন, আমরা টিভির খবরগুলো দেখতে চাই স্বচ্ছতার সঙ্গে। কিন্তু সেখানে খবরগুলো যদি স্পন্সর হয়ে যায় তাহলে তো এই স্বচ্ছতা আর থাকলো না।
ব্যারিস্টার মাসুদ আহমেদ সাঈদ বলেন, দেশের বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে সংবাদ প্রচারের বিভিন্ন অংশে কোনও ধরনের বাণিজ্যিক স্পন্সরের বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। উদাহরণ হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য সংবাদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল স্বাস্থ্য সংবাদ, এই ধরনের কোনও টাইটেল স্পন্সর করে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে কোনও সংবাদ পরিবেশন করা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নিলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা সংবাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়- এরকম অভিযোগে ২০১১ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। এমএ মতিন নামের এক স্কুলশিক্ষক এই রিট দায়ের করেছিলেন। তবে রিটকারীর মৃত্যুর পর ফারুক মো. হাসিব নামের একজন ব্যবসায়ী ওই রিটে পক্ষভুক্ত হয়ে মামলার কার্যক্রম চলমান রাখেন। পরে ওই রিটের ওপর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি সব টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকসহ মোট ২৪ জনকে বিবাদী করা হয়।
ওই রিটের ওপর জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সোমবার রায় ঘোষণা করলেন হাইকোর্ট।
এসএইচ-১৩/০৬/১৯ (ন্যাশনাল ডেস্ক)