ভালবাসার অশ্রুজলে বিদায় নিলেন বাংলাদেশ পুলিশের শীর্ষ নারী কর্মকর্তা পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর রেক্টর (অতিরিক্ত আইজিপি) রৌশন আরা বেগম।
বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাকে। গত ৫ মে স্থানীয় সময় সাড়ে ৬টায় শান্তিরক্ষা মিশন পরিদর্শনকালে কঙ্গোর কিনসাসায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।
রৌশন আরা বেগমের প্রথম জানাজা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর নয়াটোলা জামে মসজিদে, দ্বিতীয় জানাজা দুপুর ১২টায় মগবাজার ওয়ারলেস জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে এসআই শিরু মিয়া মিলনায়তনে বাদ জোহর সর্বশেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন রাজারবাগ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মো. আল-আমিন।
রাজারবাগ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত জানাজায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, চাঁদপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, সরকারের সচিববৃন্দ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ, মরহুমার দীর্ঘদিনের সহকর্মীগণ, পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়-স্বজনরা অংশগ্রহণ করেন।
জানাজার আগে রৌশন আরা বেগমের জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুর রহমান। এরপর জানাজায় অংশ নেয়া লোকদের উদ্দেশ্যে কথা বলেন রৌশন আরার স্বামী ব্যবসায়ী শফিকুল আলম চৌধুরী।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে মরহুমার মরদেহ টার্কিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানযোগে দেশে এসে পৌঁছে। বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি ড. মইনুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম এবং পরিবারের সদস্যরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণ করেন।
বিমানবন্দর থেকে মরদেহ তার রাজধানীর মহানগর প্রজেক্টের বাসভবনে নেয়া হয়। তখন এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনরা প্রিয় মানুষকে হারানোর বেদনায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
জানাজার আগে অতিরিক্ত আইজিপি রৌশন আরা বেগমকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
সাংবাদিকদের তিনি জানান, রৌশন আরা বেগম যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে ছিলেন খুবই সিরিয়াস। তিনি দক্ষ ও অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতেন। তাকে অতিরিক্ত কোনো দায়িত্ব দেয়া হলে সেটা অত্যন্ত সতর্কভাবে করতেন। পুলিশ বাহিনীর সদরদফতরের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল হৃদয়ের গহীনে। তার মৃত্যুতে পুলিশ বাহিনীর অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
বিএ-১৬/০৯-০৫ (ন্যাশনাল ডেস্ক)