হাইকোর্টের আদেশ মানেনি গ্রীন লাইন

বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারকে অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তি দেয়নি গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

আদালতের আদেশ না মানায় গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষের হয়ে আর মামলায় লড়বেন না বলে জানিয়েছেন তাদের আইনজীবী অজি উল্লাহ।

রাসেলকে মাসে পাঁচ লাখ টাকা কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের অবশিষ্ট ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে গ্রীন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে গত ২৫ জুন নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে কিস্তি পরিশোধ করে ১৫ তারিখে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন (কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট) দিতে বলেছিলেন আদালত। মঙ্গলবার এ বিষয়ে আদেশের জন্য রেখেছিল।

মঙ্গলবার রাসেলকে ক্ষতিপূরণ পরিশোধের প্রতিবেদন না পেয়ে এদিন বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী ২১ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছেন।

আদালতে গ্রিনলাইন পরিবহনের আইনজীবী অজি উল্লাহ, বাংলাদেশে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএর পক্ষে রাফিউল ইসলাম রাফি, রিট আবেদনের পক্ষে খোন্দকার শামসুল হক রেজা ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার শুনানি করেন।

মঙ্গলবার আদেশের পর রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা বলেন, রাসেলকে মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে দিতে হাইকোর্টের আদেশ পালন করেনি গ্রীন লাইন। তারা সর্বশেষ আদেশের পর কোনো টাকা দেয়নি। এমনকি কোনো যোগাযোগেও করেনি।

‘গ্রীন লাইন হাইকোর্টের আদেশ পালন না করে চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। তাদের যদি সমস্যা থাকে তাহলে সেটা আদালতকে জানাতে পারত। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। ’

এ সময় গ্রিনলাইনের আইনজীবী অজি উল্লাহ বলেন, হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন সে আদেশ গ্রীন লাইন কর্তৃপক্ষ পালন না করায় আমি তাদের আইনজীবী হিসেবে নিজেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের কাছে আমার সিদ্ধান্ত পাঠিয়ে দেব।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ এপ্রিল রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী ধোলাইরপাড় প্রান্তে গ্রীন লাইন পরিবহনের একটি বাসের চাপায় পা হারান এপিআর এনার্জি লিমিটেডের গাড়িচালক রাসেল।

গ্রীন লাইন বাসটির চালক কবির বেপরোয়া গতিতে পেছন দিক থেকে মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়। এ সময় বাসের সামনে গিয়ে কবিরের কাছে ধাক্কা দেয়ার কারণ জানতে চান রাসেল।

এর জের ধরে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কবির ইচ্ছা করেই রাসেলের শরীরের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন। দ্রুত সরার চেষ্টা করলেও এক পা বাঁচাতে পারেননি রাসেল।

ঘটনাস্থল থেকে রাসেলকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় গ্রীন লাইন বাসের চালক কবির মিয়াকে একমাত্র আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন রাসেলের ভাই আরিফ সরকার।

পা হারানো রাসেল সরকারের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রাসেল রাজধানীর আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিংয়ে বসবাস করতেন এবং স্থানীয় একটি ‘রেন্ট-এ-কার’ প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার চালাতেন।

বিএ-১৩/১৬-০৭ (ন্যাশনাল ডেস্ক)