মধ্যরাতেই হামলার আইএসের দায় স্বীকার

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের নিরাপত্তায় নিয়োজিত (প্রটেকশন) পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢাকার মিরপুর রোডের সায়েন্সল্যাব মোড়ে বোমা হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটস (আইএস)।

শনিবার মধ্যরাতে জিহাদি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তারা এই দায় স্বীকার করে।

সাইট ইন্টেলিজেন্স জানায়, ঢাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে অত্যাধুনিক আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে আইএস। এতে দুই পুলিশ আহত হয়েছে।

সাইট ইন্টেলিজেন্সে আরবি ভাষায় প্রকাশিত বিবৃতিতে আইএস জানায়, ১৪৪১ হিজরির ১ মুহাররম খিলাফতের এক সেনা দুই জন পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এতে তারা অনেক আহত হয়। আমরা আল্লাহর কাছে তাদের ধ্বংস প্রার্থনা করি।

উল্লেখ্য, শনিবার রাতে ঢাকার মিরপুর রোডের সাইন্সল্যাব মোড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বত্তরা। এ ঘটনায় সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আমিনুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর নিরাপত্তা দলের অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শাহাবুদ্দিন আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, আহত দুজন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ঘটনার কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রীর গাড়িবহর ঘটনাস্থলের সামনেই ছিল। মন্ত্রীও গাড়িতে ছিলেন। তাকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের গাড়িটি সামনে ছিল। একজন পুলিশ সদস্য প্রটেকশনের গাড়ি থেকে নেমে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে যানজট নিরসনে কাজ করছিলেন। তখনই বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। মন্ত্রী সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এর আগে রাজধানীর মালিবাগ ও গুলিস্তানে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলার সঙ্গে এর মিল রয়েছে। তবে হামলার লক্ষ্যবস্তু কারা, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।এর আগে রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ এপ্রিল গুলিস্তানে একটি ট্রাফিক বক্সের পাশে হাতে তৈরি বোমা বা আইইডি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্য ও একজন কমিউনিটি পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনার ঠিক ২৮ দিন পর গত ২৬ মে রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর মালিবাগের পলওয়েল ফিলিং স্টেশনের বিপরীতে ফ্লাইওভারের নিচে রাখা পুলিশের বিশেষ শাখার একটি পিক-আপভ্যানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে।

এতেও ট্রাফিক পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার, লাল মিয়া নামে একজন রিকশাচালক ও শাহনাজ শারমিন নামে এক পথচারী আহত হন। এছাড়া ২৩ জুলাই রাতে রাজধানীর পল্টন ও খামাড়বাড়ি পুলিশ বক্সের কাছে ফেলে রাখা বোমা উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনার পর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

তবে পুলিশ কেন বার বার হামলার শিকার হচ্ছে, জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, হলি আর্টিজানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে পুলিশ যেভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে রুখে দিয়েছে, সে কারণেই পুলিশ টার্গেট হতে পারে।

তিনি বলেন, ধারণা করছি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের পুলিশ বক্সকে টার্গেট করেই হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশই মূল টার্গেট বলে মনে হচ্ছে।

বিএ-০৪/০১-০৯ (ন্যাশনাল ডেস্ক)