ছাত্রলীগের ‘চাঁদাবাজি’ আড়াল করতেই ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধ

ছাত্রলীগের ‘চাঁদাবাজি’ আড়াল করতেই সরকার আদালত দিয়ে ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রোববার রাজধানীতে এক বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।

‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয় মিছিলটি।

এতে রিজভী ছাড়াও বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি মো. নাজমুল হাসান, ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী হাফিজুর রহমান, ফজলুল রহমান খোকনসহ অঙ্গ সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

রিজভী বলেন, ওবাদুল কাদের সাহেব জানেন, এই ছাত্রলীগের পাণ্ডাদের দিয়ে কীভাবে বিশ্বজিতকে হত্যা করাতে হয়, কীভাবে হরতালের ওপর আঘাত করাতে হয়, কী করে গণতান্ত্রিক শক্তির ওপর মোটরসাইকেল র‌্যালি দিয়ে আক্রমণ করাতে হয়, কীভাবে বাচ্চা শিশুদের ওপর হাতুড়ি পেটাতে হয়। এখন গোটা দেশে এই ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি নিয়ে ছি. ছি. পড়ে গেছে। আর এই ছি. ছি.কে আড়াল করার জন্য জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই ছাত্রদের কাউন্সিল বন্ধ করে দেয়া হয়।

তিনি বলেন, একদিকে যখন চাঁদাবাজি, আরেকদিকে গণতন্ত্রের পক্ষে ছাত্রদল যখন কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন তারা আদালতকে কসাইয়ের ছুরি হিসেবে ব্যবহার করছে। আর ছুরি দিয়ে কাউন্সিল বন্ধ করছে। এটা বন্ধ করাচ্ছেন শেখ হাসিনা।

ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ৮৬ কোটি টাকা দাবি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের কাছে। ভাইস-চ্যান্সেলর, সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যে যেটা ফুটে উঠেছে সেখানে জ্ঞানের কথা নেই, বিজ্ঞানের কথা নেই, সাহিত্যের কথা নেই। আছে চাঁদাবাজির কথা। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ঈদের খরচের জন্য আমি চেয়েছি।

আমি ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম, অনেক দিন মধুর ক্যান্টিন থেকে বাসায় হেঁটে এসেছি- লজ্জায় কাউকে বলতে পারিনি। আজকে শেখ হাসিনা উপহার দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তারা ঈদের খরচের জন্য টাকা চান। এখন গোটা দেশে এই ছাত্রলীগ নিয়ে ছি. ছি. ছি. ছি. পড়ে গেছে। এটাই হচ্ছে- টক অব দি কান্ট্রি।

সরকারকে অভিযুক্ত করে রিজভী বলেন, আপনারা শেয়ারবাজার খেয়েছেন, বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক খেয়েছেন। আমরা হলমার্কের লুটপাটের কথাও জানি- সব আপনারা, আপনার উপদেষ্টা-মন্ত্রীরা। এখন কোনো কিছু দিয়ে ঢাকা যাবে না। আপনাদের দুর্নীতি, আপনাদের চাঁদাবাজি- এখন সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে। ক্ষমতা হাতে থাকার কারণে তারা (সরকার) ভেবেছেন- তারা যা ইচ্ছা তাই করবেন।

ছাত্রদলের কাউন্সিল সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা শেষ দেখে ছাড়ব। আদালতে আমাদের কথাগুলো বলার পরে আমরা যদি দেখি এটা ন্যায়ের পক্ষে নয়, গণতন্ত্রের পক্ষে নয়, তখন আমরা নতুন করে সিদ্ধান্ত নেব। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি।

বিএ-১৪/১৪-০৯ (ন্যাশনাল ডেস্ক)