এবার পাইকার ও এজেন্টদের তলব করছে গোয়েন্দারা

পেঁয়াজ

বড় আমদানিকারকদের জিজ্ঞাসাবাদে পেঁয়াজের মজুদ খুঁজে পাননি শুল্ক গোয়েন্দারা। তাই এবার পাইকার ও এজেন্টদের তলব করে জিজ্ঞাসা করা হবে।

অভিযোগ উঠেছিল, কারসাজি করে মূল্য বাড়িয়ে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল করেছেন বড় আমদানিকারকরা। কিন্তু তথ্যের সত্যতা পাননি গোয়েন্দারা। তাই এখন পাইকারি ব্যবসায়ী ও এজেন্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, পেঁয়াজের বেশ কিছু বড় চালান শিগগিরই বন্দরে এসে পৌঁছাবে। মেসার্স রায়হান ট্রের্ডাসের মালিক শহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টন পেঁয়াজ লাগে সারা দেশে। বর্তমানে এই পরিমাণ পেঁয়াজ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে ঘাটতি আছে। পেঁয়াজের বাজার অস্থিশীল করার জন্য দায়ী পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. সহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মেঘনা গ্রুপের ৭৮০ টন পেঁয়াজের একটি চালান মঙ্গলবার বন্দরে এসে পৌঁছেছে। মিয়ানমার থেকে আনা পেঁয়াজের ১১০০ টন এরইমধ্যে টেকনাফ বন্দরে খালাস হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়টি চালান দেশে আসার পথে। ওই সব চালান দেশে আসলে শিগগিরই বাজার সহনীয় হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুল্ক গোয়েন্দার ডিজি আরও বলেন, আমদানিকারকরা যাদের কাছে বিক্রি করেছে তাদের তথ্য আমরা পেয়েছি। তাদের তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আমদানিকারক ও পাইকারদের দামের মধ্যে কোনো অসঙ্গতি আছে-কি/না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়নি। কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে প্রয়োজনে পাইকারদের ডাকা হবে।

আমদানিকারকরা বলেছেন, পেঁয়াজ খালাসের পর বন্দরেই বিক্রি করে দেন তারা। সেখানে অনেক এজেন্ট থাকে। তাদের কাছে কমিশনে বিক্রি করা হয়। ওই সব এজেন্ট মোটা দামে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন। এর পর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পাইকারী বাজার থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসেন এবং সেই পেঁয়াজ ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করা হয়।

গোয়েন্দরা সন্দেহ করছে, সরবরাহ পর্যায়ে কোনো স্তরে পেঁয়াজের মূল্য নিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। কারা এর জন্য দায়ী তাদের খুঁজে বের করতে শুল্ক গোয়েন্দাসহ সরকারের একাধিক সংস্থা কাজ করছে। যদিও এর জন্য আমদানিকারক দুষছেন পাইকার ও এজেন্টদের। আর পাইকাররা তীর ছুড়ছেন আমদানিকারকদের দিকে।

তবে একটি গোয়েন্দা সূত্র বলেছে, সম্প্রতি পেঁয়াজ কারিসাজির পেছনে ১০ থেকে ১২জন আমদানিকারক দায়ী, যারা সমুদ্র পথে বড় চালানের পেঁয়াজ এনেছে। কেজি প্রতি ৪০ টাকায় এনে ১৮০ টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে।

শুল্ক গোয়েন্দার ডিজি সহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সমুদ্র পথে যেসব ব্যবসায়ী পেঁয়াজ এনেছেন তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

শুল্ক গোয়েন্দা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে যারা পেঁয়াজ এনেছেন তাদের কেনা-বেচার তথ্য চাওয়া হবে। গত দুই মাসে ওই বন্দর দিয়ে কী পরিমাণ পেঁয়াজ এনেছে, কারা এনেছে, কত দামে এনেছে, কার কাছে বিক্রি করেছে-এসব তথ্য চেয়ে শিগগিরই চিঠি দেওয়া হবে।

বিএ-১৬/২৬-১১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)