প্রতিবন্ধীদের অবারিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, সমাজের মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেরই দায়িত্ব প্রতিবন্ধীদের উন্মুক্ত-অবারিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা। এ জন্য সবার মাঝে চেতনার উন্মেষ ঘটাতে হবে। প্রতিবন্ধীরা যাতে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলসহ সর্বত্র উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের সব নাগরিককে সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। এরপর একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করা হয়। সেই সঙ্গে ‘ডিজাবিলিটি ব্যারিয়ার্স : রোল অব রিহ্যাবিলিটেশন ফিজিশিয়ান্স’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনের আয়োজন করা হয়।

এসব কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ডা. মো. মাঈনুজ্জামান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. তসলিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. এ কে এম সালেক। সঞ্চালনা করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আলী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন অধ্যাপক ডা. শামসুন নাহার।

অনুষ্ঠানসমূহে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে মাহবুবুল হক, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মশিউর রহমান খসরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়, অবারিত হোক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভবিষ্যৎ।

ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। প্রতিবন্ধীরা যাতে তাদের ন্যায্য অধিকার ভোগ করতে পারেন সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে।

ডা. সাহানা আখতার বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের কথা বলা আছে। প্রতিবন্ধীবান্ধব দেশ গড়তে কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধিতা অক্ষমতা নয়। প্রতিবন্ধীদের অধিকার বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. তসলিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবন্ধীদের সমাজের সর্বত্র অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, আমরা সবাই একত্রে আগত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি, যেখানে কোনো ধরনের কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। আমরা মনে করি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির বাড়িতে, জনসাধারণে কিংবা গাড়িতে চলাচলে কোনো বাধা থাকবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, শ্রেণিকক্ষ চাকুরিস্থল অথবা সমাজের সর্বত্র থাকবে না কোনো ভেদাভেদ। উন্মুক্ত অবারিত ভবিষ্যতের দায়িত্ব সবার।

কোনো স্বাস্থ্যগত প্রতিবন্ধকতাই আমাদের এই অবারিত ভবিষ্যতের পথে বাধা হতে পারে না। সবাই মিলে আমরা একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে পঙ্গুত্ব নির্ণয়, চিকিৎসা প্রদান ও সার্টিফিকেট প্রত্যয়ন প্রক্রিয়ায় যথাযথ ফিজিক্যাল রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন ফিজিশিয়ানকে অন্তর্ভুক্ত করা সময়ের দাবি।

বিএ-০৯/০৪-১২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)