জেল থেকে মুক্তি পেলে যুক্তরাজ্যে যাবেন খালেদা জিয়া

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ফের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্নিষ্ঠ শাখায় আবেদনটি অ্যাফিডেভিট আকারে জমা দেওয়া হয়। জামিনে মুক্তি পেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে যাবেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কেএম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বুধবার আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে সমকালকে জানিয়েছেন আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন। শারিরীক অবস্থা ও বয়স বিবেচনা উল্লেখ করে মানবিক কারণে যুক্তি তুলে ধরে জামিন আবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। তিনি জামিন পেলে চিকিৎসা জন্য বিদেশে তথা ইউকে যাবেন।

এদিকে, খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পাওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, তারা আইনি লড়াইয়ে প্রস্তুত রয়েছে। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সমকালকে বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে খালেদা জিয়ার একটি আবেদন পেয়েছি। জামিন আবেদনের ২৪ নম্বর প্যারায় বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বরের পরে তার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি চলতে পারেন না। এমনকি অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি খাবার এবং ওষুধও নিতে পারেন না।

সুতরাং তার বিদেশে, তথা যুক্তরাজ্যের মতো দেশে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট/থেরাপি (বায়োলজিক এজেন্ট) দরকার। কিন্তু আইনগতভাবে দুদক কাউকেই ছাড় দেবে না। অতীতেও দেয়নি, ভবিষ্যতেও দেবে না। আমরা জামিন আবেদন পর্যালোচনা করেছি। আইনি লড়াইয়ের জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত।

এর আগে গতবছর ৩১ জুলাই হাইকোর্টের এই বেঞ্চ চ্যারিটেবল মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন। এরপর ওই খারিজ আবেদনের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগ গত ১২ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন। এই খারিজের রায় গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এ অবস্থায় নতুন করে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করার উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

বুধবার দাখিল করা ওই আবেদনে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও সগির হোসেন লিওনের নাম রয়েছে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট্র দুর্নীতির মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালত খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। ওই সাজা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া। ওই আপিল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ঠ শাখায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। কিন্তু শুনানির কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে আগামী ১১ মার্চ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচনের আগে এ মামলা শুনানি নিয়ে নানা মত রয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন থাকলেও কারামুক্তিতে বাধা মাত্র দুই মামলায়। নানা আইনি জটিলতায় মুক্তি মিলছেনা খালেদা জিয়ার। খালেদা জিয়ার মুক্তিতে এখন অন্তত দুই মামলায় জামিন পেতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

বিএ-০৮/১৮-০২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)