চলতি সপ্তাহে ১২-১৭ বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগ

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে চলতি সপ্তাহ থেকে ২১ জেলার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের সকল স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদেরকে টিকা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার দুপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমেই তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। আর তাদের জন্য আলাদা টিকা কেন্দ্র তৈরি করা হবে।

খুরশীদ আলম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে এতোদিন অনুমোদন না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনেভায় গিয়ে ডব্লিউএইচওর ডিজির সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বিষয়ে তারা সম্মতি দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশে ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেটি মাথায় রেখে আমরাও একই টিকা দেব।

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১২ বছরের বেশি শিক্ষার্থীদের অনুমোদন না দিলেও বিভিন্ন দেশে তাদের ফাইজার দেওয়া হচ্ছে। আমাদেরও এমনটা পরিকল্পনা আছে। ইতোমধ্যে ২১টি কেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে। এটি চাইলে সব জায়গায় দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, ফাইজারের টিকা সংরক্ষণের জন্য সারাদেশে ওরকম সুযোগ সুবিধা নেই।

এর আগে ১০ অক্টোবর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্মতিতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের সক স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীকে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি চারদিন আগে জেনেভায় সফরে গিয়েছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সংক্রমণরোধে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের সকল স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীকে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে এখন ফাইজারের ৬০ লাখ টিকা মজুত রয়েছে। এই ৬০ লাখ টিকা ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে। এর মধ্যে চলতি মাসে আরও ৭০ লাখ টিকা আসবে। তখন শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রমে কোনো ঘাটতি পড়বে না।

এদিকে সরকার আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে আট কোটি মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকার আওতায় আনতে সক্ষম উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সাত কোটি ২২ লাখ টিকা পেয়েছি। এর মধ্যে তিন কোটি ৬১ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ এবং এক কোটি ৭৯ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এখন এক কোটি ৮১ লাখ ডোজ টিকা রয়েছে। তবে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন আছে আরও পাঁচ কোটি ২০ লাখ মানুষের।

তিনি আরও বলেন, আগামী মার্চের মধ্যে ১২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারব। এ জনসংখ্যা দেশের ৭০ শতাংশ। তবে এখন করোনা নিয়ন্ত্রণে আসলেও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

জাহিদ মালেক জানান, ইনসেপ্টার কারখানায় টিকা বানানোর ব্যাপারে সবশেষ আপডেট জানা নেই তার।

সাত মাসের স্থবিরতা কাটিয়ে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের টিকা ক্রয়ের চুক্তির আওতায় ১০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেশে এসে পৌঁছেছে।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বিশেষ বিমানে ভারত থেকে এ টিকা দেশে এসে পৌঁছায়। তবে বাকি টিকা পাঠানোর শিডিউল এখনো সেরাম দেয়নি বলে আজ জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এছাড়া দৈনিক টিকা দেওয়ার হার বাড়িয়ে ১০-১৫ লাখ ডোজ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

এসএইচ-১১/১২/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)