দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকা ক্যাম্পেইনের দ্বিতীয় ডোজ ২৮ অক্টোবর

মহামারি করোনভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকা ক্যাম্পেইনের প্রথম ডোজের টিকা গ্রহীতাদের আগামী ২৮ অক্টোবর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ও টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বিশেষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। ওই ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে ২য় ডোজের কার্যক্রম আগামী ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে।

শামসুল হক বলেন, এই ক্যাম্পেইন চলাকালে শুধুমাত্র ২য় ডোজ দেওয়া হবে। সেদিন সারাদেশে সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলায় বিশেষ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইনটি অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, চলতি মাসেই আমরা চার কোটির মতো মানুষকে টিকার দুই ডোজ দিতে পারব। আগামী ২৮ অক্টোবর টিকা ক্যাম্পেইনের প্রায় ৮২ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ পাবেন। আর আগামী মাসে অন্তত পাঁচ কোটি মানুষকে দুই ডোজ পূর্ণ টিকা দিতে পারব।

তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্যমাত্রা দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। টিকা ও জনবল স্বল্পতায় সেটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ হলেও অন্তত পাঁচ কোটি মানুষকে দুই ডোজ পূর্ণ করা গেলে অনেকটা বড় স্বস্তি মিলবে।

গত ২৮-২৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইনের দুই দিনে প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৭৮ লাখ ১১ হাজার ২১৬ জন। একইসঙ্গে এ সময়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়েছেন আরও ২ লাখ ৮২ হাজার ২০ জন। সবমিলিয়ে ওই দুই দিনে মোট প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৮০ লাখ ৯৩ হাজার ২৩৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র জানায়, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন ও শহর এলাকাজুড়ে এ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচিতে সরকারি, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবীসহ প্রায় ৮০ হাজার লোক অংশ নিয়েছেন।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জানিয়েছে দেশে চলমান টিকা কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীতে সবচেয়ে বেশি ৩৭ লাখ ১৪ হাজার ২৬৬ জন টিকা পেয়েছেন। সবচেয়ে কম পেয়েছেন বান্দরবান জেলায় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৯৫ জন।

বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানেও এগিয়ে আছে ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগের ১ কোটি ১৩ লাখ ৯২ হাজার ২১৭ জন অন্তত এক ডোজ টিকা পেয়েছেন। চট্টগ্রাম বিভাগে অন্তত এক ডোজ টিকা পাওয়া মানুষের সংখ্যা ৭০ লাখ ৩৩ হাজার ৪১৬ জন।

এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬ লাখ ৫৩৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০ জন, রংপুর বিভাগে ৪৬ লাখ ১৮ হাজার ৩২১ জন, খুলনা বিভাগে ৫২ লাখ ৪৯ হাজার ৬৯৯ জন, বরিশাল বিভাগে ২৩ লাখ ৯২ হাজার ৯৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ২২ লাখ ৪০ হাজার ১৩৫ জন এক ডোজ টিকা পেয়েছেন।

দেশে সব মিলিয়ে ৬ কোটি ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৩৬৩ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন সব মিলিয়ে ৪ কোটি ২ লাখ ৮৯ হাজার ৪৪৯ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ২ কোটি ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৯১৪ জন।

টিকাগ্রহীতাদের সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে সিনোফার্মের টিকা। চীনের তৈরি এই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে ২ কোটি ৮৮ লাখ ৮৮ হাজার ৭৭৫ জন। এছাড়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ৮২ লাখ ২১ হাজার ৩১৯ ডোজ, মডার্নার ২৬ লাখ ৯৮ হাজার ১৯২ ডোজ এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের ৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬৩ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৪৬ লাখের বেশি। সে হিসাবে দেশের মোট জনসংখ্যার ২৪ শতাংশের বেশি মানুষ টিকা পেয়েছেন।

চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি করোনা প্রতিরোধে দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

এসএইচ-২৫/২৫/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)