খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে ‘যেকোনো’ শর্ত মানতে প্রস্তুত!

আস্থাহীনতার কারণেই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি আদালতে নিয়ে যেতে চায় না বিএনপি। দলটির আইনজীবী নেতাদের দাবি, আদালতও সরকারের নিয়ন্ত্রণে।

তাই খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি মানবিক আবেদন জানিয়েছেন তারা। এজন্য যেকোনো শর্ত মানতে প্রস্তুত আইনজীবীরা।

চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সরকারের কাছে মানবিক আবেদনও জানিয়ে আসছেন তারা। কিন্তু আদালতের পথে হাঁটছেন না।

প্রায় তিন বছর ধরে দণ্ড হওয়া দুই মামলায় খালাস চেয়ে করা আপিল পড়ে আছে সুপ্রিম কোর্টে। এতদিন তারা শুনানির উদ্যোগও নেয়নি। অনেকে বলছেন- এই দুই আপিল নিষ্পত্তি হলে হয়ত প্রেক্ষাপট ভিন্ন হতে পারত।

আর বিএনপি নেত্রীর আইনজীবীরা বলছেন- আদালতে সরকারের হস্তক্ষেপ রয়েছে, এছাড়া অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়। সে কারণেই আদালতে যেতে চান না তারা।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আদালতে সরকার, বাইরেও সরকার। এই প্রতিবেদককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, মনে আছে নিশ্চিয় তার (খালেদা জিয়ার) চিকিৎসার বিষয়ে আবেদন করেছিলাম, তার মুক্তি চেয়েছিলাম, জামিন চেয়েছিলাম। আদালতে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কীভাবে তার বিরোধীতা করেছিলেন সরকারের পক্ষ থেকে জামিনের। সরকার এখানে সহযোগিতা করে না বিরোধীতা করে। আর আদালতের ক্ষমতা আছে নাকি সরকারের বাইরে যাওয়ার।

অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে যে কোনো শর্তে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন দলটির আইনজীবী নেতারা।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন বলেন, এমন একটা সময় আসতে পারে সরকার চাইলেও তাকে (খালেদা জিয়াকে) হয়ত বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে না। সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, আমি মনে করি যে সরকারের এই অনড় মনোভাব পরিবর্তন করে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক।

দুই দফায় ৭৮ দিন হাসপাতালে থাকার পর গত ১৩ নভেম্বর তৃতীয় দফায় হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি নেত্রী।

এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা বাতিল করে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের আদেশ দিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে আবেদন করেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একাংশ। সোমবার (২২ নভেম্বর) পাঠানো আবেদনের বিষয়টি মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু।

আবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা আপনার আছে। যে ক্ষমতা সংবিধান আপনাকে দিয়েছে। দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন রক্ষায় সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাতিল করে, বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করে বাঁচার সুযোগ দিন।

এসএইচ-০৩/২৪/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)