দেশ থেকে পৌর মেয়র আব্বাস পালাতে চেয়েছিলেন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র আব্বাস আলী গ্রেপ্তার এড়াতে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই উদ্দেশ্যে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। অবশেষে রাজধানীর ইশা খাঁ হোটেল থেকে তাকে আটক করেছে র‍্যাব।

বুধবার সকালে আব্বাস আলীকে গ্রেপ্তারের পর এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, কটূক্তির ঘটনায় মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। তার কাছ থেকে নিজের (আব্বাস) পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রাজশাহী গেটে জাতির জনকের ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে মেয়র পদ হারানোর পর আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়। সেসব মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এ সময়ে কোনো ডিজিটাল ডিভাইস বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন না তিনি। তাই তার অবস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না।

র‌্যাবের গোয়েন্দা দল আব্বাসকে গ্রেপ্তারে তৎপর ছিল উল্লেখ করে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে আব্বাস আলী রাজমনি ঈশা খাঁ হোটেলে উঠেন। খবর পেয়ে র‌্যাব-৩ এর গোয়েন্দা দল তাকে নজরদারিতে রাখে। এরপর বুধবার সকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আব্বাস আলী প্রাথমিকভাবে ভাইরাল হওয়া অডিও রেকর্ডটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন। তবে ঠিক কী উদ্দেশ্যে তিনি এ ধরনের কটূক্তি করেছেন এবং কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন কটূক্তি করেছেন কি-না, তা এখনো জানা যায়নি।

তবে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা ও তিনটি মামলা রুজু হওয়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আব্বাস। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, গত ২১ নভেম্বর রাত থেকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে পৌর মেয়র আব্বাসের কটূক্তিমূলক বক্তব্যের অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের অডিও ক্লিপে মেয়র আব্বাসকে বলতে শোনা যায়, ‘কাটাখালীতে সিটি গেটটি দ্রুত নির্মাণ হবে। তবে আমরা যে ফার্মকে কাজটি দিয়েছি, তারা গেটের ওপরে বঙ্গবন্ধুর যে ম্যুরাল বসানোর ডিজাইন দিয়েছে, সেটি ইসলামী দৃষ্টিতে সঠিক না। এটি করলে পাপ হবে। তাই আমি সেটিকে বাদ দিতে বলেছি।’

এ ছাড়াও অপর একটি অডিওতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে নিয়েও অশালীন বক্তব্য দেয় আব্বাস। যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলাসহ জেলা ও কাটাখালী পৌরসভা আওয়ামী লীগের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে সুপারিশ করে জেলা আওয়ামী লীগ।

এসএইচ-০৮/০১/২১ (ন্যাশনাল ডেস্ক)