ডোপ টেস্ট ছাড়া মিলবে না লাইসেন্স

দীর্ঘ সময় পর চলতি মাসেই সরাদেশে একযোগে চালু হচ্ছে পেশাদার চালকদের ডোপ টেস্ট। এ পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যাবে কোন চালক মাদকাসক্ত। এর জন্য তাদের প্রত্যেককে দিতে হবে ৯শ’ টাকা। বিআরটিএ বলছে, পেশাদের চালকদের লাইসেন্স গ্রহণের আগে অবশ্যই দিতে হবে ডোপ টেস্ট, পাশাপশি বাস টার্মিনালগুলোতে বসানো হবে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা কেন্দ্র। এই প্রক্রিয়াকে চালকরা স্বাগত জানালেও পরীক্ষার খরচ দিতে রয়েছে অনীহা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,

দেশে সড়কপথের দৈর্ঘ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন ও নিবন্ধিত গাড়ি গত তিন দশকে কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে, সে তুলনায় সড়কে কমেনি দুর্ঘটনা বা যাত্রী হয়রানি।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০২১ সালে সড়কে দুর্ঘটনার নিহত হয়েছে ৬ হাজারের বেশি মানুষ যা গত বছরের তুলায় ১৭ শতাংশের বেশি। বেসরকারি সংস্থার তথ্য বলছে, এই দুর্ঘটনার ৩০ শতাংশ দায়ী চালকের মাদকাসক্তি। অন্যদিকে গত কয়েক বছরের তুলনায় বাসে যৌন হয়রানির ঘটনাও বেড়েছে সেখানে শুধুই ধর্ষণের শিকার ৩৪ জন নারী উল্লেখযোগ্য হারে। এসব ঘটনার অধিকাংশ দায়ী চালক ও সহযোগীরা ৷

এমন বাস্তবতায় চালকরা মাদকাসক্ত কিনা তা জানতে, চলতি মাসে সারাদেশ চালকদের ডোপ টেস্ট শুরু করবে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিআরটিএ। এর জন্য চালকের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য দিতে হবে ডোপ টেস্ট পরীক্ষা। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই চালকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে লাইসেন্স।

যদিও এই লাইসেন্স নিতে পেশাদার চালকদের পরীক্ষার জন্য দিতে হবে ৯০০ টাকা। চালকরা উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও টেস্টের ফ্রি দেওয়া নিয়ে রয়েছে অনিহা।

এ বিষয়ে একজন চালক বলেন, অনেকে আছে মদ-গাঁজা খেয়ে গাড়ি চালায়।

অপর এক চালক বলেন, ১০০ তে ২০% মাদকাসক্ত। কিন্তু ওই ২০% এর জন্য ৮০% এর দুর্নাম।

এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সব ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে বিআরটিএ। কর্তৃপক্ষ নতুন লাইসেন্সের পাশাপাশি নবায়ন করার সময় সকল চালকদের অবশ্যই দিতে ডোপ টেস্ট।

বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, এখন থেকে লাইসেন্সের আবেদনের ফর্মে ডোপ টেস্টের রেজাল্ট সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হবে। ডোট টেস্ট ছাড়া এখন থেকে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর মধ্যে দিয়ে সড়কে কমে আসবে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। তবে ডোপ টেস্টে সচ্ছতা আনতে মনিটরিং করতে হবে বিআরটিএকে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা ইনইস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ডোপ টেস্ট করার ফলেই যে বেপরোয়া ড্রাইভিং নিয়ন্ত্রণ করা যাবে তেমন কিন্তু নয়। পরীক্ষার স্বচ্ছতা আনতে হবে পাশাপাশি এটি নিয়মিত মনিটরিংও করতে হবে। একইসঙ্গে মাদকের উৎসও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

বিআরটিএর তথ্য মতে দেশে নিবন্ধিত পরিবহনের সংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ আর তার বিপরীতে চালক রয়েছে ২৭ লাখ।

এসএইচ-০৩/১৪/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)