কী বার্তা নিয়ে ঢাকা আসছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী?

চীনের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গেল মাসে মিয়ানমারে সফর করেন। এরপর শনিবার ঢাকা সফরে আসছেন তিনি। তাই সাবেক কূটনীতিকরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে আশার আলো দেখছেন। আর এ সফরেই ডলারের ওপর চাপ কমাতে চীনা মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়াতে আলোচনার তাগিদ কূটনীতিবিদদের।

১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে এসে বসতি গেড়েছে বাংলাদেশে। এতে টেকনাফে লোকসংখ্যার বিচারে স্থানীয়রাই হয়ে গেছে ‘সংখ্যালঘু’। খুন, ছিনতাই, মাদক কারবার, ধর্ষণসহ নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের সংশ্লিষ্টতা তৈরি করেছে মারাত্মক নিরাপত্তা ঝুঁকি।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে গেল কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করেও এখনও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি বদলেছে। রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে গাম্বিয়ার করা মামলায় মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত। এতে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যার বিচার গতি পেয়েছে।

শুধু তাই নয়, জান্তা সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করছে দেশটির সাধারণ মানুষও। এমন প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জান্তা সরকারের কাছ থেকে পাওয়া বার্তা নিয়েই ওয়াং ই বাংলাদেশে আসছেন বলে ধারণা সাবেক কূটনীতিকদের।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, আমার ধারণা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো বার্তা পেয়েছেন, যা বাংলাদেশের সামনে উপস্থাপন করবেন। আবার হতে পারে চীন নিজেই উদ্যোগী হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, মিয়ানমারই রোহিঙ্গা সংকট তৈরি করেছে। চীন যেহেতু উভয় দেশেরই বন্ধু। সুতরাং এ সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব তাদের নিতে হবে। এ বার্তাটা চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিতে হবে।

বাংলাদেশের মোট আমদানি বাণিজ্যের ২৫ শতাংশই আসে চীন থেকে। ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ১৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। বিপরীতে রফতানি করেছে মাত্র ৬৮০ মিলিয়ন ডলার।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ২০১৮ সালেই চীনা মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে তা রয়েছে একেবারেই সীমিত পর্যায়ে। ইউয়ানের ব্যবহার বাড়ানো গেলে চাপ কমতো ডলারের ওপর।

আলোচনায় এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ। দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে।

এসএইচ-২২/০৫/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)