দূরপাল্লায় কিলোমিটারে ৪০ পয়সা ভাড়া বাড়লো

জ্বালানির দাম বাড়ায় যানবাহনের ভাড়াও বেড়েছে। সিটি সার্ভিসে কিলোমিটার প্রতি বাড়ছে ৩৫ পয়সা। দূরপাল্লায় ৪০ পয়সা করে বাড়বে।

শনিবার রাতে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠক শেষে এ তথ্য জানা গেছে।

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বাড়ল গণপরিবহনের ভাড়া। মহানগরীতে বাস ও মিনিবাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ২টাকা ১৫ পয়সা থেকে বেড়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে প্রতি কিলোমিটারে বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২ টাকা ২০ পয়সা বাড়ানো হয়েছে।

৪ ঘণ্টা বৈঠক শেষে ভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন সড়ক সচিব এ বি এম আমিনুল্লাহ নুরী। তিনি বলেন, মহানগর এলাকায় বাস ভাড়া ৩৫ পয়সা বেড়ে আড়াই টাকা, দূর পাল্লায় ৪০ পয়সা বেড়ে ২ টাকা ২০ পয়সা হয়েছে। সর্বনিন্ম ভাড়া ১০ টাকাই থাকছে। মিনিবাসে ভাড়া থাকছে ৮ টাকা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বাস ভাড়া দূরপাল্লায় বেড়েছে ২২ শতাংশ। সিটি সার্ভিসে বেড়েছে ১৬ শতাংশ।

এর আগে বিকেল ৫টায় বিআরটিএ ভবনে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠকে বসে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ)। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিআরটিএ ১৫ শতাংশ ভাড়া বাড়াতে চাইলেও সমিতির দাবি ৩০ শতাংশ।

বৈঠকে অংশ নেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, পরিচালক (প্রশাসন) মো. আজিজুল ইসলাম, পরিচালক (অপারেশন) মো. লোকমান হোসেন মোল্লা, সচিব এ টি এম কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা।

বৈঠকের আগে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিআরটিএ সিটি সার্ভিসে ১৩ শতাংশ, দূরপাল্লায় ১৬ শতাংশ, লঞ্চে ২০ শতাংশ ভাড়া বাড়তে চাচ্ছে। কিন্তু পরিবহন মালিক সমিতির দাবি সার্বিক ব্যয় বৃদ্ধি বিবেচনায় নিয়ে ৩০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করতে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভেতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা প্রতি লিটার, কেরোসিন ১১৪ টাকা প্রতি লিটার, অকটেন ১৩৫ টাকা প্রতি লিটার ও পেট্রোল ১৩০ টাকা প্রতি লিটার হবে। শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে কার্যকরের কথা বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

আগে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ছিল প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা, কেরোসিন ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা ও পেট্রোল ৮৬ টাকা।

এ বিষয়ে শনিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।

এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। যা বাড়িয়েছে তাতে পরিবহন খাতে অস্থিরতা দেখা দেয়া খুবই স্বাভাবিক। কেন, কী কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে সেটার ব্যাখ্যা সরকারই দেবে। তবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে ভাড়ার সমন্বয় না হলে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তিনি বলেন, আমরা পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নেতা ও মালিকপক্ষ বৈঠকে বসবো ভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে।

এসএইচ-১৫/০৬/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)