জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন

কোনো ধরনের গণশুনানি ছাড়া সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে পারে কি না সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।

রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এক রিট আবেদনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়ের কাছে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করেন।

হাইকোর্টের প্রশ্নের উত্তরে ডিএজি অরবিন্দ কুমার রায় জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জ্বালানির দাম বাড়াতে পারে কারণ এটি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতির নির্দেশে মন্ত্রণালয় ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল এবং অকটেনের দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বলেও যুক্তি দেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম যথাক্রমে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ ও ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে।

গত ৮ আগস্ট জ্বালানি তেল ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ। রিটে তেলের দাম বৃদ্ধি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেট স্থগিত, বাতিল ও প্রত্যাহার চাওয়া হয়।

অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ আদালতকে বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্ট, ২০০৩ এর অধীনে গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের মতামত চাওয়ার পর কেবল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম বাড়াতে পারে। সরকার কোনো গণশুনানি না করে এবং জনগণের মতামত না নিয়েই জ্বালানি পণ্যের দাম ‘অযৌক্তিকভাবে’ বাড়িয়েছে, যা আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, ‘জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শেখ মো. বেলায়েত হোসেন গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতির নির্দেশে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ানোর গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন যদিও এ ধরনের পণ্যের দাম বাড়ানোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বের কোনো সম্পর্ক নেই।’

ইউনুস আলী আরও বলেন, পেট্রোলিয়াম পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি দেশের কৃষক-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর অত্যন্ত বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

এদিকে হাইকোর্ট আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্টকে বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্ট, ২০০৩ এর ৩৪ ধারা লঙ্ঘন করে সরকার পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম বাড়িয়েছে।

রোববার শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রিট আবেদনের শুনানি আগামী মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতবি করেন।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম যথাক্রমে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ ও ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে।

এসএইচ-১৯/১৪/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)