সরকার পতনের আন্দোলনে চমক আসছে

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম‌ বলেছেন, যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে একটা চমক আছে। সেই চমকের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে কবে নাগাদ যুগপৎ আন্দোলন শুরু হবে এবং সেই চমকই–বা কী, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

রোববার বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম‌। বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে বেরিয়ে গুলশান কার্যালয়ের সামনে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম‌ বলেন, ‘আমরা বলেছি যুগপৎ আন্দোলন কবে? তবে আমরা একমত হয়েছি তারিখটা প্রকাশ না করার জন্য। তবে একটা বাংলা শব্দ বলতে পারি, চমক আছে। আপনারা তার জন্য মেহেরবানি করে প্রস্তুত থাকতে পারেন।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমি একজন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। আমি মনে করি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম, সেটি আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ। সেখানে আমরা সবাই মিলে এই যুদ্ধ লড়ব এবং জয়ী হব। এখানে জয় ব্যতীত অন্য কোনো বিকল্প নাই।’

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি যুগপৎ আন্দোলন করতে প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে দলটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘যখন আমাদের মধ্যে সিদ্ধান্তটা হবে, যে চমকের জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি, হয়তো আপনারা আমার আগে খবর পাবেন, সেটা ঘোষণা হওয়া মাত্রই আমাদের রাজপথে পাবেন।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের নিপীড়নের অন্যতম অস্ত্র হয়েছে উল্লেখ করে এই আইন বাতিলের দাবি জানান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও সব রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি ধর্মীয় অঙ্গনের সব আলেম-ওলামা যাঁদের ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে, তাঁদের মুক্তির জন্য করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিএনপি ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি কোনো অবস্থাতেই ধর্মীয় নেতাদের ওপর অত্যাচার ও নিপীড়নকে অবহেলা করছে না, আমরা সেটাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছি।’

এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা একটি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন, তার অংশ হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা করছেন। তিনি বলেন, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধান যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আন্দোলন শুরু করা হবে, সেই দাবিগুলোর বিষয়ে আজকের বৈঠকে মতৈক্য হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন করে তার মাধ্যমে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা ইত্যাদি বিষয়ে কল্যাণ পার্টির সঙ্গে তাঁরা একমত হয়েছেন।

এর আগে অন্তত ২২টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। দ্বিতীয় দফায় আবার সংলাপের প্রয়োজনীয়তা কেন হলো, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ জন্যই আমরা প্রথম দফায় নীতিগতভাবে একমত হয়েছিলাম যে যুগপৎ আন্দোলনের জন্য আমরা একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলব। এখন আমরা কোন কোন দাবিতে বা কোন ইস্যুতে আন্দোলন করব, সে বিষয়ে সব দলের সঙ্গে একমত হওয়ার জন্য আলোচনা করছি।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রথম দফায় ২২ দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। এই দফায় নতুন করে কেউ যুক্ত হলে তাদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে, শুধু আওয়ামী লীগ ছাড়া।

বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন। অপর দিকে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব রাসেদ ফেরদৌস সোহেল মোল্লা, আবদুল্লাহ আল হাসান সাকিবসহ ৯ জন অংশ নেন।

এসএইচ-১০/০২/২২ (ন্যাশনাল ডেস্ক)