মাকে পাঁচ টুকরো করে হত্যা : ছেলেসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় মাকে পাঁচ টুকরো করে হত্যা মামলায় ছেলেসহ ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়াও প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত।

জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সুবর্ণচর উপজেলার জাহাজমারা গ্রামের হুমায়ুন কবির, মো. নিরব, কসাই নুর ইসলাম, আবুল কালাম মামুন, মিলাদ হোসেন সুমন, মো. হামিদ, ইসমাইল।

জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।

মামলার বরাতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বিকেলে সুবর্ণচর উপজেলার জাহাজমারা গ্রামের একটি ধানক্ষেত থেকে গৃহবধূ নুর জাহানের মাথাসহ দেহের দুই টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন একই ক্ষেত থেকে মরদেহের আরও তিন টুকরো উদ্ধার করা হয়।

পিপি বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রথমে ওই নারীর ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যামামলা করেন। তদন্তের এক পর্যায়ে সন্দেহভাজন হিসেবে মো. নীরব ও কসাই নুর ইসলাম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মামলার বাদী নিজেই জড়িত বলে তথ্য বেরিয়ে আসে।

‘এরপর পুলিশ হুমায়ুনকে প্রধান আসামি করে অন্য একটি মামলা করে। ছেলে হুমায়ুন কবিরসহ মামলার ৫ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তিতে তারা রোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেয়। ২৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।’

মামলা বিবরণে উল্লেখ করা হয়, নিহত নুর জাহানের প্রথম সংসারের ছেলে বেলাল হোসেন ঘটনার বছর খানেক আগে মারা যান। তার রেখে যাওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দ্বিতীয় সংসারের ছেলে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে মায়ের বনিবনা হচ্ছিল না। এর জেরেই মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হুমায়ুন। আর সেই হত্যাকাণ্ডে বন্ধু, প্রতিবেশী ও স্বজনের সহায়তা নেন তিনি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬ অক্টোবর রাতে ওই নারীকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ পাঁচ টুকরো করে প্রতিবেশী পাওনাদারদের ধানক্ষেতে রেখে আসা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র, বটি, একটি কোদাল ও নারীর পরনে থাকা শাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ।

এআর-০১/২৪/০১ (আঞ্চলিক ডেস্ক)