সুদান থেকে ফিরছেন ৭০০ বাংলাদেশি

আগামী সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। আগামী ৩ অথবা ৪ মের মধ্যে দেশে ফিরতে আগ্রহী তালিকাভুক্ত ৭০০ বাংলাদেশিকে পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রোববার (৩০ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দেশে ফেরানোর অগ্রগতি নিয়ে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি, ২ অথবা ৩ মে প্রথম দফায় তালিকাভুক্ত ৭০০ জনকে পোর্ট সুদানে নেওয়া হবে। সেখান থেকে ৩ অথবা ৪ মে তারা জাহাজে করে জেদ্দায় পৌঁছাবেন। সেখানে তাদের থাকার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা করেছে সৌদি সরকার। প্রয়োজনে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মদিনায় যাওয়া ফ্লাইট ব্যবহার করে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

তিনি বলেন, যাদের কাছে পাসপোর্ট আছে তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে, আর যাদের পাসপোর্ট নেই তাদেরকে ট্রাভেল পারমিট দিয়ে পাঠানো হবে। আমরা বিমান প্রস্তুত রেখেছি। মধ্যপ্রাচ্যে বিমানের একাধিক সার্ভিস আছে। তাই বিমানের মাধ্যমে তারা দেশে আসতে পারবেন। বিশেষ ফ্লাইট লাগলে সেটারও ব্যবস্থা রয়েছে।

ইতোমধ্যে সুদান থেকে ৩৫ বাংলাদেশি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছেছেন বলে জানান শাহরিয়ার আলম। সুদানে সৌদি ও আমিরাতের বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করতেন তারা। শাহরিয়ার আলম বলেন, ৩৫ জনের ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তারা অন্য দেশের হয়ে সুদানে কাজ করতেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে আমরা বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনব।

সুদান থেকে দেশে ফিরতে আগ্রহীদের তালিকার বাইরে থাকা প্রবাসীদেরও দেশে ফেরার অনুরোধ করেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ৭০০ জনের বাইরে যারা এখনও রেজিস্ট্রেশন করেননি, রেজিস্ট্রেশন করে দেশে ফিরে আসতে তাদের অনুরোধ করব। ওখানে অনেকে থাকতে চান তবে সেখানে থাকা এখন নিরাপদ নয়। ওখান থেকে চারপাশে মরুভূমি। তাই অন্যত্র যাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। তাই তারা খার্তুমের নম্বরের পাশাপাশি সৌদি আরব, ইথিওপিয়া ও আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর দূতাবাসে যোগাযোগ করলে আমরা তাদের ফিরিয়ে আনব।

সুদান থেকে দেশে ফেরাদের কর্মসংস্থানের কথা মাথায় রেখে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ডাটাবেস তৈরি করবে বলে জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ফিরে আসাদের জন্য ডাটাবেস প্রস্তুত করা হবে। তারা যেহেতু অসময়ে ফেরত আসছেন, তাই তাদের কর্মস্থানের ব্যবস্থার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

সরকার দেরিতে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না। সব দেশ তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে এনেছে বিষয়টা তো এমন নয়।

খার্তুমে বাংলাদেশ মিশন রাখার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, এটা সময়ই বলে দেবে। পরের দফায় ১০০ জনও যদি থাকে…একজন বাংলাদেশি থাকা পর্যন্ত মিশন সেখানে কাজ করবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সুদানে সেনাবাহিনী ও মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেখানে আটকা পড়েছেন দেড় হাজারের বেশি বাংলাদেশি। সুদানে সব মিলিয়ে ১৫০০ থেকে ১৮০০ বাংলাদেশি রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের বেশিরভাগই দেশটিতে চাকরি ও ব্যবসা-বাণিজ্য করেন।

এসএ-০১/৩০/০৪ (ন্যাশনাল ডেস্ক)