কোরবানির ঈদের আর মাত্র একদিন বাকি থাকলেও এখনো আশানুরূপ পশু বিক্রি করতে পারছেন না দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিক্রেতারা। বিশেষ করে ছাগল বিক্রেতারা হতাশ হয়ে পড়ছেন। সঙ্গে আষাঢ়ের বৃষ্টি যোগ হওয়ায় আরও বিপাকে পড়ছেন তারা।
মঙ্গলবার ঢাকার কমলাপুর, গোপীবাগ ও মুগদার সমন্বিত পশুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর এ হাটে কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে হাটের প্রধান ফটক পর্যন্ত ফুটপাতে ছাগলের হাট বসানো হয়েছে। কিছু জায়গায় অস্থায়ী শেড দেওয়া হলেও বেশিরভাগ বিক্রেতাই ফুটপাতে শেডছাড়া এসব ছাগল ও ভেড়া বিক্রি করছেন। ফলে হালকা বৃষ্টিতেই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সারিবদ্ধভাবে সাজানো এসব ছাগলের বিক্রেতারা ক্রেতার অপেক্ষায় রয়েছেন। বাজারে পর্যাপ্ত ছাগল ও ভেড়া থাকলেও নেই ক্রেতা। আবার যারা আছেন তাদের বেশিরভাগই দাম জিজ্ঞাসা করেই চলে যাচ্ছেন।
বিক্রেতারা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ছাগলের দাম কম হলেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। দাম কম হলেও ক্রেতা সংকট কাটছে না।
নারায়ণগঞ্জ থেকে ছাগল বিক্রি করতে এসেছেন এলাহি ফকির। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমি দশটি ছাগল নিয়ে এসেছি। মাত্র একটি ছাগল বিক্রি করতে পেরেছি। বাকিগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে। বৃষ্টিতে ভিজলে ছাগলের অনেক সমস্যা হতে পারে।
কিন্তু কিছুই করার নেই। অন্যবারের তুলনায় এ বছর দাম অনেক কম। তবুও কেউ ছাগল কিনছে না।
নরসিংদী থেকে ৬০টি ছাগল নিয়ে এসেছেন আনোয়ার উদ্দীন। তিনি বলেন, আমি দুইদিন আগে ৬০টি ছাগল নিয়ে এসেছি এখানে। এখন পর্যন্ত ৩টি বিক্রি করতে পেরেছি। শেষ পর্যন্ত কতগুলো বিক্রি করতে পারব সেটাও বুঝতে পারছি না। বাজারে ক্রেতাই নেই। দামও জিজ্ঞাসা করছে না কেউ।
তিনি বলেন, দশ থেকে বারো কেজি মাংস হবে এমন ওজনের ছাগল ৮ থেকে হাজার টাকার বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি আজ বিকেল থেকে বিক্রি বাড়তে পারে।
শেরপুর থেকে ৪২টি ছাগল ও ৩টি ভেড়া নিয়ে এসেছেন শুকুর মিয়া। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি কম। ছাগলের দামও এ বছর কম। ভেড়ার দাম কিছুটা বেশি। ১৫ কেজি ওজনের একটি ছাগল ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হাট পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক সিরাজ হোসেন বলেন, শতকরা ৫ টাকা হারে হাসিল নেওয়া হচ্ছে। এ বছর অনেক বেশি টাকা দিয়ে হাটে ইজারা নিতে হয়েছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী হাসিলের রেট বাড়াতে পারছি না। এ বছর হাটে ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকছে। গরু-ছাগলের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থাও থাকছে। এছাড়া পাইকারদের জন্য থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের টিম জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা করবে।
এসএইচ-১৮/২৭/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)