রাজনৈতিক দলগুলোর সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েকটি সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে গণপরিবহন, যাত্রী ও সন্দেহভাজনক পথচারীদের তল্লাশি করছে পুলিশ। অনেকেরই মোবাইল ফোন চেক করতে দেখা যাচ্ছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী গাবতলী থেকে সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘মোবাইল চেকের সময় আমাকে জিগ্যেস করা হয়েছে আমি বিএনপির সমাবেশে যাচ্ছি কি না, বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে কি না ও মোবাইলে বিএনপির কোনো ছবি আছে কি না।
যাত্রীদের অভিযোগ, দীর্ঘসময় ধরে পুলিশের তল্লাশির কারণে সড়কের ঢাকামুখী লেনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চেকপোস্টের কারণে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রাজধানীর প্রবেশমুখ সাভারের বলিয়ারপুর থেকে আমিনবাজার ব্যাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ঢাকাগামী লেনে পরিবহনগুলো যানজটে আটকে আছে। অপর লেন দিয়ে বিপরীতদিকে যাতায়াতরত পরিবহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
আমিনবাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় সাভার মডেল থানা ও আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা বাসের যাত্রী, সন্দেহভাজন পথচারীদের তল্লাশি করছেন।
এদিকে, যানজটে আটকে বিরক্ত হয়ে অনেক যাত্রীকেই পায়ে হেঁটে আমিনবাজার এলাকা পার হতে দেখা গেছে।
সাভার থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আব্দুর রহিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দীর্ঘসময় যানজটে আটকে থেকে অবশেষে পায়ে হেঁটে রওনা হলাম।’
জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ট্রাফিক সপ্তাহ চলছে। এটি আমাদের নিয়মিত তল্লাশিরই অংশ। তবে সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীতে যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে না পারে সেজন্য তল্লাশিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।’
তল্লাশিতে কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে, গাবতলী, আমিনবাজারে দীর্ঘসময় ধরে পুলিশের তল্লাশীর কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
গাবতলী থেকে বেসরকারি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি সকালে মহাখালীর উদ্দেশে রওনা দিই। বাস সাভারের আমিনবাজার এলাকায় পৌঁছালে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাসটি আটকে দেয়। সব যাত্রীকে বাস থেকে নেমে যেতে বলা হয়।’
প্রিন্স পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী দীপু বলেন, ‘আমিনবাজার পুলিশের চেকপোস্টে ১ ঘণ্টা আটকে ছিলাম। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিল। দুপুর ২টায় আমাদের পরীক্ষা। কোনো উপায় না পেয়ে বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেছি।’
‘নাগরিকদের জীবনকে বাধাগ্রস্ত করা— এটা মেনে নেওয়া যায় না,’ হতাশা প্রকাশ করে বলেন তিনি।
উল্লেখ্য, মানুষের ‘ভোটাধিকার’ আদায়ের লক্ষ্যে আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সরকার পতনের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিএনপি। রাজধানীর ১২টি জায়গা থেকে যুগপৎভাবে একই ঘোষণা দেবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২–দলীয় জোট, এলডিপি, গণ অধিকার পরিষদ, গণফোরাম, এবি পার্টিসহ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট। অপরদিকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
এসএইচ-০৯/১২/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)