নির্বাচন নিয়ে দেশের পরিস্থিতি জানতে চান ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত

আসছে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশের পরিস্থিতি কেমন যাবে সেটা ব্রিটিশ হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাদের (ব্রিটিশ হাইকমিশনার) বলা তো তারা বলবেই। কেউ নির্বাচনে যদি আসে এটা তার অধিকার। রাজনৈতিক অধিকার, আমি তাকে জোর করতে পারব না অংশগ্রহণ করতে।”

বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমেরিকানদের আমরা যা বলেছি, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আমরা যা বলেছি, আজকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার তাকেও ঠিক তাই বলেছি। আমাদের বক্তব্য অভিন্ন না। যেভাবে ইলেকশনটা হবে সে নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আমাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে, প্রত্যেক দেশেই ইলেকশনের বিষয়টা সব গণতন্ত্রিক দেশে একই রকম। ইলেকশন কমিশন ইলেকশন কন্ডাক্ট করে। আমাদের ইলেকশন কমিশন এক সময় সাব-অর্ডিনেট অফিস ছিল প্রাইম মিনিস্টার অফিসের। ইলেকশনের একটা অ্যাক্ট পার্লামেন্টে অ্যাপ্রুভ করা হয়েছে। এরপর ইলেকশন কমিশনের স্বাধীনতা, তাদের রেগুলেটরি, লিগ্যাল, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ, ফিন্যান্সিয়াল পাওয়ারগুলো তাদের বেড়ে গেছে। তারা অনেক বিষয়ে স্বাধীন হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের সংবিধান বলছে, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। এখন শেখ হাসিনার সরকার পাওয়ারে আছে। এই সরকার তখন রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। শিডিউল ডিক্লেয়ারের পরপরই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। তারা কোনো মেজর পলিসি ডিসিশন নিতে পারবে না বা করতে পারবে না। তারা শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। আর ইলেকশন করার জন্য যে যে সহযোগিতা দরকার সেটা নির্বাচনকালীন সরকার দেবে।”

আপনাদের বক্তব্য শোনার পরে তাদের কোনো বক্তব্য আছে কি না জানতে চাইলে কাদের গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, “আলোচনা হলে যে রকম হয়, সে রকম আলোচনা হয়েছে। আমি বলেছি আমাদের বিষয়, হাইকমিশনার এসেছেন কিছু বিষয় জানতে, তিনিও জানতে চেয়েছেন আমাদের এবং নির্বাচন নিয়ে এ দেশে পরিস্থিতিটা কেমন যাবে? এসব কিছু আলোচনায় স্বাভাবিক কারণে এসে গেছে।”

তিনি বলেন, “আমি একটা বিষয় এখানে বলতে চাই, আমরা; মেইন অপজিশন এবং আওয়ামী লীগ ডিসেম্বর থেকে এই ঢাকা শহরে অনেক সভা-সমাবেশ-পদযাত্রা করেছে এবং আমরাও শান্তি সমাবেশ করেছি। গতকালও তাদের পদযাত্রা ছিল, আমাদের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে অপজিশনের সঙ্গে ঢাকা শহরে এ যাবৎকালে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে মিটিং অনেকগুলো হয়েছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে কখনো কোনো সংঘাত, কোনো প্রকার সংঘর্ষ হয়নি। যেটা হয়েছে গত কয়েক দিনে হঠাৎ করেই কিছু কিছু জায়গায় সংঘাতসংকুল অবস্থা হয়েছে। কোথাও আমাদের অফিস পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে। তাদেরও কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে সংঘাত হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে তাদের একজন মারা গেছে সেটা তারা দাবি করে এবং সেটা পুলিশের সঙ্গে সংঘাতের জেরে। চট্টগ্রামে গতকাল দুএকটা ঘটনা ঘটেছে। এ রকম কিছু কিছু ঘটনা ঘটেছে। এখন এটার জন্য সরকারের যা করা দরকার, সরকারের পক্ষ থেকে বলা আছে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে কোনো বাধা বা উসকানিমূলক কোনো কর্মকাণ্ড তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা তাদের অবশ্যই ছাড় দেওয়া যাবে না। ক্রিমিনাল অফেন্ডার তো ছাড়া পেতে পারে না!”

কাদের যোগ করেন, “বিএনপি কথাও কথাও বলে, তাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়ে গেছে। এর তো কোনো প্রমাণ-ট্রমাণ কখনো দেখিনি। মির্জা ফখরুল বারবার বলেন, তাদের ১১ হাজার পর্যন্ত উঠে গেছে। এই ১১ হাজারের তালিকাটা তিনি দয়া করে দেবেন কি? যে ১১ হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। প্রতিদিনই এই সংখ্যাটা কেবল বেড়েই চলেছে। আমরা রুলিং পার্টি, শান্তিতে দেশটা চলবে, শান্তিপূর্ণ ইলেকশনটা হবে এটাই তো আমাদের চাওয়া হবে। এর ব্যত্যয় হোক এটা তো আমরা চাইবো না! এই দেশে অশান্তি হলে ক্ষতিটা আমাদের। ইলেকশনের ক্ষতি। আমরা সেই অশান্তি কেন ডেকে আনব?”

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তাদের (ব্রিটিশ হাইকমিশনার) বলা তো তারা বলবেই। কেউ নির্বাচনে যদি আসে এটা তার অধিকার। রাজনৈতিক অধিকার, আমি তাকে জোর করতে পারব না অংশগ্রহণ করতে। যে অংশগ্রহণ করবে, করবে। তারা যে শর্ত জুড়ে দিচ্ছে সেটা তো সংবিধানের বাইরে, বিরুদ্ধে। কীভাবে আমি মেনে নেব? সেটা হলো কথা।

এসএইচ-০৩/২০/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)