যুক্তরাষ্ট্রে কর্মস্থলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী ইয়াজ উদ্দিন রমিমের পরিবারে এখনও চলছে শোকের মাতম। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী মা বুকের ধন হারিয়ে যেন শোকে পাথর হয়ে গেছেন, কান্নার শক্তি নেই, দু’চোখ বেয়ে শুধু গড়িয়ে পড়ছে অশ্রু। একমাত্র বড় ভাই, যার কাছে রমিম ছিল বন্ধুর মতো, ভাইয়ের স্মৃতি বুকে নিয়ে বেদনার ভার বয়ে চলেছেন তিনি। নিহতের তিনদিনেও আমেরিকায় থাকা স্বজনরা একবারও রমিমের মুখটিও দেখতে পায়নি। আর বাংলাদেশে বসে তার মা-ভাই, স্বজনরা বসে আছেন, কখন একটি ভিডিও কল আসবে, শেষবারের মতো একবার দেখবে আদরের রমিমের মুখটি।
শোক আর ক্ষোভ একাকার হয়ে গেছে পরিবারটির সদস্যদের মধ্যে। আমেরিকার মতো একটি সভ্য দেশে কেন খুনের তিনদিনেও কোনো আসামি ধরা পড়ল না, কিভাবে পুলিশের হাত থেকে আসামি পালিয়ে যেতে পারল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
রমিমের মা নাসিমা বেগম বলেছেন, ছেলের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেখে যেতে পারলে তার বুক জুড়াবে। ভাইয়ের দাবি, তার আদরের ছোট ভাই হত্যার বিচার।
যে স্বপ্ন নিয়ে মাত্র ১৬ বছরের ছেলেকে আমেরিকায় পাঠিয়েছিলেন নাসিমা বেগম, একটি গুলিতে সেই স্বপ্নের অপমৃত্যু হয়েছে।
ভাই রিয়াজ উদ্দিন আসিফ বললেন, বাবা মারা যাবার পর ভেবেছিলেন ছোট ভাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে, উন্নত দেশে পাঠিয়ে তার উন্নত ভবিষ্যত গড়ে দিতে হবে। সেই স্বপ্ন নিয়েই বাংলাদেশের প্রশাসনের দফতরে-দফতরে ঘুরে অনেক যুদ্ধের পর ভাইকে পাঠাতে পেরেছিলেন আমেরিকায়। কিন্তু স্বপ্নের দেশ তাদের ছেলেটিকে এভাবে কেড়ে নেবে, সেটা এখনও ভাবতে পারছেন না।
মানবিক দেশ আমেরিকায় কেন প্রকাশ্যে একজন মানুষকে অমানবিকভাবে খুন হতে হয়, কেন তিনদিনেও আসামি ধরা পড়ে না, কেন তিনদিনেও সন্তানের মুখটি একবার স্বজনরা দেখতে পেল না- এসব প্রশ্নের উত্তর কী মিলবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে, এমনই জিজ্ঞাসা রমিমের স্বজনদের।
এসএইচ-০৮/২১/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)