ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে আবার নতুন নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই আসনে পরাজিত প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। এই দাবি জানিয়ে তিনি আজ রোববার নির্বাচন কমিশনে লিখিত আবেদন করেন।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে এ-সংক্রান্ত আবেদন করেন।
গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত (মোহাম্মদ এ আরাফাত)। তবে ওই দিন ভোট গ্রহণের শেষ পর্যায়ে রাজধানীর বনানী এলাকার বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হিরো আলমের ওপর এ হামলা হয়। হামলাকারীরা নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরে ছিলেন। এ ঘটনায় দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর করা আবেদনে হিরো আলম বলেন, ‘নির্বাচনের দিন ১৭ জুলাই ই-মেইলের মাধ্যমে আপনাকে অবহিত করেছিলাম এই মর্মে যে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে আমার তালিকাভুক্ত মনোনীত প্রায় ৮৮ জন এজেন্ট ১৯টি ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ব্যাপক জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। এবং নির্বাচনের দিন বেলা তিন ঘটিকায় বনানী বিদ্যানিকেতন ভোটকেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে ভোট গ্রহণ পরিদর্শনে গেলে সরকারদলীয় ক্যাডার দ্বারা আমার উপরে শারীরিক…উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা, যা দেশ ও বিদেশের কোটি কোটি মানুষ ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে। ওই ঘটনার পর বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমার মনোনীত এজেন্টদের জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে ভোট গণনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ নির্বাচনবিধি পরিপন্থী এবং আমার ওপরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা ও ব্যাপক জাল ভোট ও ভোট গণনার অনিয়ম নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তাই আমি মনে করি, এই নির্বাচন বিধিসম্মত হয়নি।’
সাড়ে ১২টার দিকে হিরো আলম নির্বাচন কমিশনের যান। আবেদন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হিরো আলম। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, দ্বিতীয়বারের মতো একই কেন্দ্রে যাওয়ায় পুলিশ তাঁকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
এ বিষয়ে হিরো আলম রোববার বলেন, ‘কমিশনার ফারুক স্যার যা কথাটা বলেছেন, তা খুবই দুঃখজনক, লজ্জাজনক। উনি বলেছেন, আমি নাকি একই কেন্দ্রে দুইবার গেছি। দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি, ভিডিও ফুটেজগুলো দেখবেন? আমি ওই কেন্দ্রে দুইবার গেছি কিনা। একবারই গেয়েছিলাম।’
হিরো আলম বলেন, ‘উনারা (পুলিশ) বলেছে, নিরাপত্তা ভেতরে দেবে, বাইরে দেবেন না, এটা ভুল ধারণা। কারণ, পুলিশ সারা বাংলাদেশে নিরাপত্তা দেবে, এটাই পুলিশের কর্তব্য। পুলিশের দায়িত্ব ঢাকা-১৭ আসনের পুরো এলাকার নিরাপত্তা দেওয়া। অথচ দেখলাম আমাকে যারা মারধর করছে পুলিশ তাদেরকে বের করে দিচ্ছে আমাকে বের করে না দিয়ে। তাদের উচিত ছিল আমাকে সসম্মানে কেন্দ্রের ভেতর থেকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া।’
হিরো আলম আরও বলেন, ‘যখন আমাকে ওরা বেদম মারধর করছিল, তখন পুলিশের কর্তব্য ছিল আমাকে রক্ষা করা। তারা বিজিবি মোতায়েন করেছে। তারা আমাকে মারতে মারতে যখন বিজিবির গাড়ির কাছে নিয়ে গেল, তখন বিজিবির গাড়ি থেকে একটা লোকও নামল না। তারা আমাকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা অর্জন করেছে। পুলিশ আমাকে কোনো দিনই নিরাপত্তা দিতে পারেনি।’
এসএইচ-০৩/২৩/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)