গেল নির্বাচনের চেয়ে এবার বিদেশিদের তৎপরতা বেশি হলেও তা নিয়ে বিচলিত নয় সরকার। এই অবস্থানের কথা জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘টানাপোড়েন’ থাকলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে তার কোনো প্রভাব পড়বে না। পশ্চিমা দেশগুলোর কারো কারো ভ্রান্ত ধারণা আছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, সেগুলো দূর করতে দূতাবাসগুলো চেষ্টা করছে। আন্দোলনের নামে বিএনপি যে সহিংসতা চালাচ্ছে, সে তথ্যও বিদেশি বন্ধুদের কাছে পৌঁছাতে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার।
নির্বাচনের তফসিল হয়নি এখনও। তার আগেই উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ। নতুন নতুন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে বিরোধীরা, আর তা মোকাবেলায় শান্তি সমাবেশ নিয়ে সক্রিয় ক্ষমতাসীনরা। এমন অবস্থায় বাড়ছে দুশ্চিন্তা, সহিংসতার শঙ্কাও। সরকার ও দলের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী; এমনটা দাবি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ২০১৪ বা ১৮ সালের চেয়ে পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। যদিও এবার অনেক আগে থেকেই নির্বাচন ইস্যুতে পশ্চিমা কূটনীতিকরা সক্রিয় বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। কোনো দল নির্বাচনে আসলো কিনা, সেটি সুষ্ঠু ভোটের মানদণ্ড হতে পারে না বলে দাবি তার।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০১৮ নির্বাচনের আগে তাদের আমরা এতটা অ্যাক্টিভ দেখিনি, যতটা এবার অনেক আগে থেকে তারা অ্যাক্টিভ হয়েছেন। আমি চাইবো একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন, যেখানে সব দল আসবে। আমরা তো কাউকে পালকী পাঠিয়ে নির্বাচনে আনবো না।
এতদিন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেও এবার জাতিসংঘের অধীনে ভোটের কথা তুলেছেন ১৪ মার্কিন কংগ্রেসম্যান। এ ধরনের চিঠিতে সরকার চিন্তিত কিনা, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, তাদের ভুল ধারণা ভাঙাতে বাংলাদেশ দূতাবাস কাজ করছে। শাহরিয়ার আলম বলেন, চিঠিগুলাকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছি না। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাথে আমাদের কয়েকটি খুবই গঠনমূলক বৈঠক হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যে সফরগুলো হয়েছে তাতে তাদের যে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল, যে বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করেছি, যেসব জায়গায় আমরা উন্নতি করেছি তারা অ্যাপ্রিসিয়েট করেছেন।
বিএনপি’র সাম্প্রতিক কর্মসূচি চলাকালে সহিংসতার ছবি টুইট করে তাতে মার্কিন কংগ্রেসম্যানকে ট্যাগ করেছেন শাহরিয়ার। এটি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা হলেও বিরোধীদের নৈরাজ্যের চিত্র পশ্চিমাদের কাছে পৌঁছাতে চায় সরকার। শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের দূতাবাস সেই কংগ্রেসম্যান এবং সিনেটের কাছে এই ঘটনাগুলো পৌঁছে দিচ্ছে।
বিএনপির ভুলে ওয়ান-ইলেভেন এসেছিল দাবি করে নতুন করে তেমন পরিস্থিতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ওরা বিপদ ডেকে এনেছিল। কিন্তু এখন সে রকম লিডারশিপ নেই। এখন অনেক শক্তিশালী এবং পরিষ্কার। কোনো অস্পষ্টতা নেই।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ভারত তিন দেশের ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন আগেও ছিল। বর্তমান সরকার সেটি পরিপক্কতার সাথে সামলাচ্ছে বলেও দাবি করেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা সব সময়ই ছিল।
এসএইচ-০৫/০১/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক)