বাংলাদেশে হত্যা, গ্রেপ্তার ও দমন–পীড়ন বন্ধ করতে হবে: অ্যামনেস্টি

বাংলাদেশ সরকারকে সবার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলছে, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে, সরকারের প্রতি ভিন্নমত পোষণ করা কোনো অপরাধ নয়।

২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের সময় পুলিশ ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় এক পুলিশ সদস্যসহ দুজন নিহত হয়েছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক কর্মকর্তা ইয়াসাসমিন কাভিরত্নে ২৮ অক্টোবর ও পরবর্তী ঘটনা সম্পর্কে বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় জোরদার করার মধ্য দিয়ে আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনের আগে ভিন্নমতাবলম্বীদের কঠোরভাবে দমনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে মনে রাখতে হবে, ভিন্নমত পোষণ করা অপরাধ নয়। প্রত্যেকের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকারের প্রতি অবশ্যই সম্মান দেখাতে হবে।

ইয়াসাসমিন কাভিরত্নে আরও বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময়ে এবং পরে বারবার হত্যাকাণ্ড, গ্রেপ্তার ও দমন–পীড়ন মানবাধিকার পরিস্থিতিকে হতাশাজনক করে তুলেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আবারও প্রতিবাদকারীদের ওপর দমন–পীড়ন বন্ধ করতে এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সুযোগ তৈরি করে দিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

আঞ্চলিক কর্মকর্তা বলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ যে পুলিশ যেকোনো মৃত্যুর ঘটনা স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে তদন্ত করবে, যাতে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড কাম্য নয়। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, প্রতিবাদ-বিক্ষোভে কিছু ব্যক্তি সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে, যারা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেছে, তাদের সেভাবে প্রতিবাদের সুযোগ দিতে হবে এবং অন্যদের অধিকারের কথা বলে তাদের প্রতি সহিংস আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

ইয়াসাসমিন কাভিরত্নে আরও বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে উত্তেজনা বাড়তে পারে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে, মানুষের ক্ষয়ক্ষতি এবং সংকট এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব সংস্থা যেন আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজ করে।

মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি দাবি করেছে, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের আগে তাদের প্রায় ১ হাজার ২০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত শনিবার ঢাকায় ঢাকায় প্রতিবাদ–বিক্ষোভ ছিল এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড়। আবারও সংঘর্ষ হয়েছে এবং এতে পুলিশ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে। গণমাধ্যমের খবরে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবাদকারীরাও সহিংসতায় জড়িয়েছে। বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের নেতা শামীম মোল্লা ও এক পুলিশ সদস্য সংঘর্ষের সময় আহত হন এবং পরে দুজনের মৃত্যু হয়।

ঘটনার পরদিন রোববার কর্তৃপক্ষ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাসায় বাসায় তল্লাশি চালায়। মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে প্রতিবাদকারী ও বিরোধীদলীয় নেতাদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও সহিংস হামলার তথ্যাদি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যাচাই-বাছাই করেছে।

এসএইচ-১০/৩১/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক, সূত্র : প্রথম আলো)