জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা আবারও অভিযোগ করেছেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা তারা ক্ষমতায় আসার পর বাস্তবায়ন করেনি। তাঁরা আরও বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নিলে প্রয়োজনে ‘ভোট বর্জন’ করা হবে।
শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়নসহ সাতটি সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকার করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তার কিছুই বাস্তবায়ন করেনি; বরং আওয়ামী লীগ সরকার সংখ্যালঘুদের বারবার উপেক্ষা করার চেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করায় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নিজেদের সংখ্যালঘুবান্ধব দাবি করলেও তাদের সরকারের সময়ে হিন্দুদের ওপর বেশি নির্যাতন হচ্ছে। সরকারি দলের নেতারা নির্যাতন করছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তারাও এর সঙ্গে যুক্ত আছেন। সংখ্যালঘুরা এখন নিরাপত্তাহীন পরিবেশের মধ্যে আছে।
লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক রিপন দে। সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায় বলেন, হিন্দুরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়—এই বলে আর পার পাওয়া যাবে না। কারণ, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের কথা দিয়ে তা ‘বরখেলাপ’ করেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে আবার সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতন বাড়ার আশঙ্কা জানিয়েছেন হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়। এ জন্য তিনি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে দেশের ভোটের আগে-পরে হিন্দু–অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি জানান।
ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রিপন দে বলেন, তাঁরা সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলবেন। সরকার যদি প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে, তাহলে তাঁরা অন্যান্য সংগঠনগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি প্রবীর রঞ্জন হালদার ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মিঠু রঞ্জনও বক্তব্য দেন।
এসএইচ-০৮/১০/২৩ (ন্যাশনাল ডেস্ক, সূত্র : প্রথম আলো)