মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হচ্ছেন কে, জানা যাবে কখন?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন ভোটারেরা। নির্বাচনে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আভাস দিয়েছে বিভিন্ন জনমত জরিপ। এদিকে জয়ী হচ্ছেন, তা জানতে কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা।

মার্কিন ব্যবস্থায় নাগরিকদের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। নাগরিকদের ভোট ভাগ হয়ে যায় ৫৩৮টি নির্বাচক ভোটের মধ্যে। এই ভোটগুলোর বিন্যাস ঠিক করে দেয়, কে হবেন প্রেসিডেন্ট।

যে প্রার্থী জনগণের ভোট জিতে নেন, প্রতিটি রাজ্য তাঁর ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটগুলো ওই প্রার্থীকে দেয়। বড় রাজ্যগুলোর ভাগে ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট বেশি থাকে। সেসব রাজ্যে কংগ্রেসের প্রতিনিধি বেশি।

এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২৭০টি গুরুত্বপূর্ণ ইলেকটোরাল ভোট পেতে কঠিন লড়াই হবে। এ সংখ্যাটি প্রেসিডেন্ট হওয়ার নিশ্চয়তা দেবে।

তবে এবারের নির্বাচনের লড়াই একেবারে শেষ সময় পর্যন্ত গড়াতে পারে। বিশেষজ্ঞরা ভোটের ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এ ছাড়া ভোট গণনা নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জের মতো জটিলতাও তৈরি হতে পারে।

নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রায় ৮ কোটি ১০ লাখ ভোটার এরই মধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন।

ভোট গণনায় কত সময় লাগতে পারে

অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে প্রথম ভোট গ্রহণ শেষ হবে ‘ইস্টার্ন টাইম’ সন্ধ্যা ছয়টায়। কিন্তু নির্বাচনী লড়াইয়ে দুই প্রার্থীর ভোট সমান হলে বিজয়ী নির্ধারণ করতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে।

২০২০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করেছিল ৭ নভেম্বর (শনিবার)। কিন্তু নির্বাচন শেষ হয়েছিল এর আগের মঙ্গলবার।

২০১৬ ও ২০১২ সালে অবশ্য ভোটারদের ফলাফল পেতে তুলনামূলক কম সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল।

ভোট শেষে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু ও ভোট গণনা করবেন। এসব কর্মকর্তাকে বাছাই বা নিয়োগ করা হয়। ভোট গণনার পদ্ধতি একেক জায়গায় একেক রকম।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঙ্গরাজ্য ডাকযোগে ও দেশের বাইরে থেকে গৃহীত ভোট গণনার প্রক্রিয়া নিয়ে আইন পরিবর্তন করেছে। যদিও পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে এমন পরিবর্তন আনা হয়নি। এ দুই দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য দুই দলের জন্য জয়-পরাজয়ে বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। অঙ্গরাজ্য দুটিতে ৫ নভেম্বরের আগে ভোট গণনার প্রক্রিয়া শুরু করার নিয়ম নেই। এতে সার্বিকভাবে ভোট গণনা ধীর হতে পারে।

কোনো অঙ্গরাজ্যে ভোট সমান হলে সেখানে ভোট পুনর্গণনার প্রয়োজন হতে পারে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগেই মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে সম্ভাব্য ফলাফল প্রকাশ করে।

তবে এ প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক নয়। অঙ্গরাজ্য পর্যায় থেকে নির্বাচনী ফলাফলের সত্যায়ন করতে হয়। ফলাফল সত্যায়নের এ শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর। আর ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সিনেট সভাপতিকে (বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস) প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল ভোটের সনদ গ্রহণ করতে হবে।

এআর-০২/০৫/১১ (আন্তর্জাতিক ডেস্ক)