নাটোরে বস্তাভর্তি গাঁজাসহ মা-স্বামীসহ শিক্ষিকা আটক

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নিজের বাড়িতে খাটের নিচে ও টয়লেটে বস্তাভর্তি গাঁজা রাখার দায়ে চন্দ্রখইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুন্নী পারভীন (৩১), তার স্বামী আমির হোসেন (৩৬) ও মা নাসিমা বেগমকে (৫৫) আটক করেছে বাগাতিপাড়া থানা পুলিশ।

সোমবার রাতে তিন ঘণ্টাব্যাপী এক অভিযান চালিয়ে গাঁজাসহ তাদের আটক করা হয়।

অভিযানে অংশ নেয়া বাগাতিপাড়া থানার এসআই খাইরুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদ পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে থানা পুলিশ উপজেলার দয়ারাম ইউনিয়নের হাটগোবিন্দপুর গ্রামের মোজাম্মেল ফকিরের মেয়ে শিক্ষিকা মুন্নী পারভীনের বাড়িতে অভিযানে যান।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন দরজা বন্ধ করে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকে।

বিষয়টি থানা পুলিশ নাটোরের পুলিশ সুপারকে জানালে নতুন করে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সেখানে গিয়ে পুরো বাড়ি ঘিরে রাখে। অবস্থা বেগতিক দেখে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির দরজা খুলে দিলে পুলিশ বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে শিক্ষিকা মুন্নীর খাটের নিচে ও টয়লেটে বিশেষ প্যাকেটজাত বস্তাভর্তি অবস্থায় সাড়ে আট কেজি গাঁজা জব্দ করে।

পুলিশ এ সময় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই বাড়ি থেকে মা-স্বামীসহ শিক্ষিকা মুন্নী পারভীনকে আটক করে।

খাইরুল ইসলাম আরও জানান, আমির হোসেনের বিরুদ্ধে মাদক, শিশু অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন থানায় চারটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর একই এলাকার আবদুল মালেক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা রহমত উল্লাহর দায়ের করা মামলায় শিক্ষিকা মুন্নীকে আসামি করা হলেও পুলিশ চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেয় বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে শিক্ষিকা মুন্নী পারভীনের প্রথম স্বামী (সেনাবাহিনীতে কর্মরত) তাকে তালাক দেন। পরে নাটোর সদরের জংলী গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলী তালুকদারের ছেলে আমির হোসেনকে বিয়ে করেন মুন্নী।

এছাড়াও শিক্ষিকা মুন্নীর ভাই মামুন, মামুনের স্ত্রী ও তাদের সহযোগী রিপন এর আগে গাঁজাসহ রংপুরে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল।

একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তার মা ও স্বামীসহ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার সংবাদে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বাগাতিপাড়ার সচেতন ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জেনে তিনি বাগাতিপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফাইজুল ইসলামকে পুলিশ রিপোর্ট সংগ্রহ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। রিপোর্ট পেলে আটকের সময় থেকেই সহকারী শিক্ষক মুন্নী পারভীনকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে।

বাগাতিপাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ফাইজুল ইসলাম আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, পুলিশ রিপোর্ট পাওয়ার জন্য সকালেই পত্র পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মাদকের মামলা হয়েছে।

বিএ-১২/১৮-১২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)