বিচারে প্রকাশ্যে জুতাপেটা, জরিমানার টাকা মোড়লদের পকেটে

পানীয়র সঙ্গে মাদক

নাটোরে এক গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টাকারীকে প্রকাশে জুতাপেটা করেছেন গ্রামের মোড়লরা। কিন্তু গোপনে জরিমানা নামে আদায় করে নিয়েছেন ৪০ হাজার টাকা।

গত ২০ আগস্ট জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার কুমরু এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে চঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।

জানা যায়, গত ১১ আগস্ট দুপুরে ভ্যানচালক বোরহান উদ্দিন কুমরুল গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়িতে বাজার থেকে কেনা চাল পৌঁছে দিতে যান।

এ সময় পুরো বাড়ি ফাঁকা ছিলো। কেবল ঘরের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন গৃহবধূ (৩২)।

একা পেয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বোরহান। কিন্তু গৃহবধূ চিৎকার শুরু করলে য়ে পালিয়ে যান তিনি।

পরে বিষয়টি স্বজনরা গ্রমের মোড়লদের জানালে তারা থানায় যেতে নিষেধ করেন।

গত ২০ আগস্ট রাতে কুমরুল গ্রামের লালুবাবুর বাড়িতে সালিশ বৈঠকে বসেন মোড়লরা।

সেখানে বাবলু কুমার, তাজেম উদ্দিন মোল্লা, টিপু মোল্লা, কাজল ও অভিযুক্ত বোরহানের শ্বশুর আকতার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর মোড়লরা বোরহানকে সাতটি জুতার বাড়ি দিয়েই বিচার শেষ করে।

সালিশে উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে জুতাপেটা করে বিচার শেষ করেন মোড়লরা।

কিন্তু গোপনে তার কাছ থেকে জরিমানার নাম করে ৪০ হাজার টাকা আদায় করেন। এই টাকা রয়ে গেছে মোড়লদের পকেটেই।

জানতে চাইলে গৃহবধূর স্বামী জানান, গ্রামের প্রধানরা বসে সবকিছু শুনে বোরহানকে জুতাপেটা করেছেন। তবে আমরা কোনো টাকা পয়সা পাইনি।

সালিশে উপস্থিত গ্রাম প্রধান মোহাম্মদ কাজল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন।

তবে ধর্ষণ চেষ্টার বিচার সালিশে করা যায় কিনা এবং টাকা ভাগাভাগির বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিলীপ কুমার দাস জানান, বিষয়টি জানা ছিল না। তাছাড়া ভিকটিমের পরিবারও কিছু জানায়নি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিএ-১০/২২-০৮ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)