বিধবার ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় যুবক ধরা, লাখ টাকায় রফা

নাটোরের সিংড়ায় রাতের আঁধারে বিধবার ঘর থেকে ইউনুস আলী নামে এক যুবক আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েছে। তবে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতারা।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ উপজেলার ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী ও যুবলীগের কর্মী সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে।

এর আগে সোমবার রাত ১টার দিকে উপজেলার ইটালি ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আটক ইউনুস আলী বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল এলাকার তয়জাল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, বাঁশবাড়িয়া গ্রামে ধান কাঁটতে এসে বিধবা এক নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় ইউনুস আলীর। এরপর তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সোমবার সন্ধ্যায় গোপালের বাড়িতে যায় ইউনুস আলী। এলাকাবাসী বিষয়টি বুঝতে পেরে রাত ১টার দিকে তাদের দুজনকে হাতেনাতে আটক করে। পরে ইউনুস আলীকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অভিভাবকদের হাতে হাতে তাদের তুলে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা।

জানা গেছে, ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী, ইউপি সদস্য কুরবান আলী, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন আরোন, যুবলীগের সদস্য সবুজ আলী, সাইফুল ইসলাম, শাহিন আলম, সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন তাদের আটক করে লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়।

স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিধবার জমির দলিল গ্রামের মজিবুর রহমান নামের একজনের কাছে রেখে আনুমানিক ৭০ হাজার টাকা এবং যুবকের বাবার কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা নিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতারা।

মজিবুর রহমান বলেন, বিধবা নারী আজ আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু কত টাকা বলা যাবে না, সমস্যা আছে। ওই নারী নিজেই বলবে।

৬ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য সবুজ আলী বলেন, আমরা রাতে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় আটক করি। সকালে ইউনুস আলীর বাবা বড়াইগ্রামের জনপ্রতিনিধিসহ এসে তাকে জুতা মেরে নিয়ে গেছে। তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

দুপুরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলীর মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। বিকেলে তাকে আটক করে পুলিশ।

ইউপি সদস্য কুরবান আলী বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, সকাল থেকে সারাদিন সিংড়ায় মিটিংয়ে ছিলাম। আমাকে ফাঁসানোর জন্য নাম বলেছে।

ইটালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মতিউর রহমান রাজা বলেন, ঘটনাটি শুনেছি, তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সবাই খুবই শৃঙ্খল ও ভদ্র প্রকৃতির মানুষ। পুলিশ দুজনকে আটক করেছে শুনেছি। তবে তারা টাকা নিয়ে ওই যুবককে ছেড়ে দিয়েছে কি না জানি না।

সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএইচ-২৩/২১/২২ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)