নানা অভিযোগে শেষ হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোট গ্রহণ

বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষ, স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া, কেন্দ্র দখল ও ভোটকেন্দ্রে বাধা দেওয়ার না না অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের উপনির্বাচন। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) শুরু হয় ভোটগ্রহণ। চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।

এ নির্বাচনী এলাকায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৮০। এ আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে কেন্দ্র দখল, কেন্দ্রের বাইরে শক্তি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অভোযাগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানান, রহনপুর পৌর এলাকার খয়রাবাদ সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহনপুর হাজি আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রহনপুর এবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ,বহিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোমস্তাপুর ইউনিয়নের গোমস্তাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর মাদরাসা, ভোলাহাট উপজেলার ভোলাহাট সদর ইউনিয়নের সাঠিয়ারবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জামবাড়িয়া ইউনিয়নের বরগাছি উচ্চ বিদ্যালয়, নাচোল উপজেলার নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকারের আপেল ও অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী খুরশিদ আলম বাচ্চুর মাথাল প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, এছাড়া রহনপুর এবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও খয়রাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ দু’টি কেন্দ্রে নৌকার কর্মী-সমর্থকরা আপেল প্রতীকের কর্মী সমর্থকদের মারধর করেছেন। তবে এনিয়ে নির্বাচন কমিশনে কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি কোনো প্রার্থী।

এ বিষয়ে আপেল প্রতীকের কর্মী মোস্তাক হাসান বলেন, রহনপুর এবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের নামের স্লিপ দিতে ব্যস্ত ছিলাম। এসময় নৌকার কর্মী মুকুল সরকার বাইরুল ও জিয়ার নেতৃত্বে অন্য কর্মী-সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালান। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হন। একপর্যায়ে তারা আমাদের মেরে তাড়িয়ে দেন। এমনকি তারা সাধারণ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিচ্ছিলেন।

সরজমিন ঘুরে লক্ষ্য করা গেছে, বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। দুপুর ১টায় দেখা যায়, ভোলাহাট উপজেলার ভোলাহাট সদর ইউনিয়নের মঞ্জুর আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ২৫০০ ভোটারের মধ্যে ১৬৫ জন ভোট দিয়েছেন। এছাড়া ভোলাহাট উপজেলার কোনো ভোটকেন্দ্রে ১০টি, কোথাও ১২টি আবার কোথাও ৬৫ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ও নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে জানতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের তার বাড়িতে ডেকে পাঠান। কিন্তু সেখানে গেলে তিনি তার বাড়ির প্রাধন ফটক বন্ধ করে দিয়ে সাংবাদিকদের পরে যোগাযোগ করতে বলেন।

নৌকার প্রার্থী জিয়াউর রহমান জানান, ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটারদের বা প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থীর এজেন্টকে বের করে দেওয়ার তথ্য সঠিক নয়। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। তবে ভোটারদের উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও দুপুরের পর এ চিত্র পাল্টে গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ -২ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর ছিল। কিন্তু ভোটারদের উপস্থিতি কম।

ভোটার উপস্থিতি কম থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আনার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর, নির্বাচন কমিশনের নয়। ফোনে বা মৌখিকভাবে প্রার্থীদের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। কোথাও কোনো সংঘর্ষ, এজেন্টকে বের করে দেওয়া বা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

এলএস-০৮/০২/২৩ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)