পুত্রবধূকে ধর্ষণ, জরিমানায় পার পেলেন শ্বশুর

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর গ্রামের মাতবররা সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করে ঘটনার রফা করেছেন বলে জানা গেছে।

সালিশে ভাঙ্গুড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক টুকুন, স্থানীয় দলিল লেখক শের মাহমুদ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সুমন আহমেদ, সাবেক ইউপি সদস্য সামাদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, বিয়ের পরে তিনি জানতে পারেন, আগের স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর যোগাযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। একপর্যায়ে স্বামী কাজের জন্য ঢাকায় আসেন। এরপর থেকেই শ্বশুর আবুল কালাম তাকে বিভিন্নভাবে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। গত ১০ নভেম্বর রাতে শ্বশুর তাকে ডাকাডাকি করেন। তিনি দরজা খুললে কালাম ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।

বিষয়টি জানতে পেরে স্বামীর হয়ে কালামের স্ত্রী তার পুত্রবধূর পায়ে ধরে ক্ষমা চান এবং ঘটনা কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। পরে কালাম এসে তাকে হুমকি দেন-ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এর কয়েকদিন পর গৃহবধূ তার নানার বাড়িতে গিয়ে তাদের কাছে ঘটনা জানান। ১৫ নভেম্বর নানার বাড়ির লোকজন কৌশলে কালাম ও তার স্ত্রীকে তাদের ওখানে ডেকে নিয়ে আটকে রাখেন। পরে সেখানে সালিশ বসে।

গৃহবধূর স্বজনরা জানান, সালিশে কালামকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করেন শের মাহমুদ। বিষয়টি জানতে পেরে ভাঙ্গুড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান সেখানে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে কালাম সেখান থেকে পালিয়ে যান।

ভাঙ্গুড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক টুকুন বলেন, ‘আমি সালিশে উপস্থিত হয়ে ওই গৃহবধূর পরিবারকে আইনি সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দেই। কিন্ত তারা দুইপক্ষই সালিশ চাইলে তাই করা হয়। এ ঘটনা শেষ করে দেওয়া হয়েছে।’

অভিযুক্ত কালাম বলেন, ‘প্রথমে সালিশে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করে। আমার সামর্থ্য না থাকায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সুমনের কাছে জানাই। সে নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জরিমানা কমিয়ে এক লাক ৭০ হাজার টাকা করেছে, যার মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা সুমনের কাছে দিয়েছি। বাকি ৩০ হাজার টাকা পরে দেব।’

ভাঙ্গুড়া থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বলেন, এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএইচ-২৪/২৪/২১ (উত্তরাঞ্চল ডেস্ক)