জনগণ ৩০ ডিসেম্বর দলে দলে নৌকায় ভোট দেবে: মেয়র লিটন

১৪ দলের রাজশাহীর সমন্বয়ক ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, মোহনপুরের পথসভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। আমি আশাবাদী হয়ে বলছি, এই বাংলার জনগণ ৩০ ডিসেম্বর সকাল বিকেল পর্যন্ত দলে দলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারো জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবে।

সোমবার বিকেলে মোহনপুর উপজেলা চত্বরে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত মহাজোটের সংসদ সদস্য প্রার্থী আয়েন উদ্দিনের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচার মিছিল ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ এসব কর্মসূচির আয়োজন করে।

পথসভায় মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, উন্নয়নের যে ছোঁয়া মোহনপুরে লেগেছে, সেই উন্নয়নের কথা নতুন করে বলার দরকার নেই। সারাদেশের মতো মোহনপুরেও যে উন্নয়ন হয়েছে, সেই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখার জন্য নৌকার বিকল্প আর কিছু হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন আসলেই বাংলাদেশের কিছু কিছু মানুষ অত্যন্ত তৎপর হয়ে ওঠে। সারাবছর যাদের দেখা পাওয়া যায় না, যাদের কোনো দল নাই, টেলিভিশনে মাঝে মাঝে আসেন টকশো করার জন্য, সেই সমস্ত তথাকথিত নেতা, তাদের দলের কেন্দ্রীয় কমিটিও নাই, তারা নির্বাচন আসলেই সক্রিয় হয়ে ওঠে।

জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সুযোগ্য সন্তান রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বর্জন করে সারাদেশে আগুন সন্ত্রাস করে দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল এবং স্বপ্ন দেখেছিল সরকারের পতন হবে। তাদের মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনা ৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী আছেন।

মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি বলেছিল, তারা খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন করবেন না, তারা বলেছিল তাদের নেতা তারেক জিয়ার নামে মামলা প্রত্যাহার না হলে নির্বাচন করবেন না। আজকে তাদের সুমতি হয়েছে, তারা সুড় সুড় করে নির্বাচনে অংশ নিতে এসেছে, আমরা খুশি হয়েছি। আমরাও মাঠে খেলেই নির্বাচনে জিততে চাই। কারণ আমাদের হাতে কোনো রক্তের দাগ নেই, আমাদের হাতে মানুষ পোড়ানোর গন্ধ নাই, আমরা কারো ক্ষতি করিনি, কারো ভূমি দখল করিনি।

তারেক জিয়া লন্ডন থেকে সমস্ত কলকাঠি নাড়ছে উল্লেখ করে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তারেক জিয়া তার মাকে জেলখানা থেকে মুক্ত করে আনার জন্যে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তারা মনে করছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে রায় নিয়ে খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করে আনতে পারবে। আইনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া বের হয়ে আসলে আমার আপত্তির কিছু নাই।

কিন্তু যেনি ডইয়িং রুমে বসে রাজনীতি করে সেই ড. কামাল হোসেন এবং ওই কাদের সিদ্দিকী যার মুজিব কোট পরার কোনো অধিকার নাই, তাদেরকে সামনে রেখে আর যাই হোক বাংলাদেশের মানুষকে ধোকা দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে না। এই বাংলার মানুষ এখন সব বোঝে, হিসাব জানে।

নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বাংলাদেশ এখন দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি। সেই সময়ে দেশের প্রত্যেকটি আসন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে, এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ইনশাল্লাহ আমাদের জয়যুক্ত হতেই হবে, আমরা জয়যুক্ত হবো ইনশাল্লাহ, এর বিকল্প কিছু নাই। এই বিজয়ের মাসে নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবঙ্গু শেখ মুজিবুর রহমান, ৩০ লক্ষ শহীদ, জাতীয় চার নেতার শাহাদত এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগ মহান হয়ে থাকবে, বিজয়ের মাসে আমরা জয়যুক্ত হবো।

মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দিলীপ কুমার সরকার তপনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী-৩ পবা-মোহনপুর আসনের বর্তমান সাংসদ ও মহাজোটের সংসদ সদস্য প্রার্থী আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আকতার জাহান, জেলা যুবলীগের সভাপতির আবু সালেহ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন, মোহনপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

এরআগে দুপুর থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে উপজেলা চত্বরে জড়ো হন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সমর্থকরা। বিকেলের মধ্যে পথসভাস্থল কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে রুপ নেয়। নির্বাচনী সভা শেষে প্রচার মিছিল বের করা হয়। মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে মিছিলটি মোহনপুর বাজার প্রদক্ষিণ করে।

বিএ-২০/১০-১২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)