রাজশাহীতে নানান আনুষ্ঠানিকতায় জাতির সূর্য সন্তানদের স্মরণ

রাজশাহীতে নানান আনুষ্ঠানিকতায় স্মরণ করা হচ্ছে জাতির সূর্য সন্তানদের। দিবসের প্রথম প্রহরে নগরীর শহীদ মিনাগুলোতে ঢল নামে জনতার। এরেই মধ্যে ফুলে ফুলে ভরে গেছে শহীদ মিনারের বেদি। বিজয়র‌্যালী ও আলোচনা সভা ছাড়াও রয়েছে নানান আয়োজন।

দিবসের প্রথম প্রহরে নগরীর ভুবনমোহন পার্ক শহীদ মিনার ও রাজশাহী কলেজ শহীদ মিনারে পূস্পার্ঘ নিবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

পরে ভোর সাড়ে ৬টা থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর রহমান, জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক এম খুরশীদ হোসেন, রাজশাহী নগর পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, জেলার পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ। এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারও।

এছাড়াও পুলিশের রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রেঞ্জ এবং জেলা আনসার, বনবিভাগ, বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় ও ডাকবিভাগসহ বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এর আগে রাজশাহীর ভুবনমোহন পার্ক শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। পরে সেখানে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এসময় দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে রাজশাহী জেলা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্টেডিয়ামে বিজয় কুচকাওয়াজের উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমান।

পরে সম্মিলিত কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি। কুচকাওয়াজে অংশ নেয় পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন শিক্ষপ্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা। পরে মনোজ্ঞ ডিসপ্লে উপভোগ করেন অতিথিরা।

এদিকে, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোকসজ্জা করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে প্রদর্শন করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রও। জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমি এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনও দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে মেয়র একাদশ বনাম বিভাগীয় কমিশনার একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন রয়েছে। এছাড়া বিকেলে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেবে সিটি করপোরেশন।

এদিকে, বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে নগরীতে বিজয় র‌্যালী কের করে নগর আওয়ামী লীগ। সকালে নগরীর কুমারপাড়া নগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে এই র‌্যালী বের হয়।

এতে নেতৃত্ব দেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এতে উপস্থিত ছিলেন, সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, মীর ইকবাল, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। র‌্যালীটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এর আগে দলীয় কার্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশও করেন। এতে নগর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এ উপলক্ষ্যে নগরীর ওয়ার্ড-কার্যালয়গুলো থেকে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭মার্চের ভাষণ এবং দেশাত্ববোধক গান। রয়েছে আলোচনা সভাও।

এদিকে, বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আলাদা কর্মসূচি পালন করছে।

এ উপলক্ষ্যে নগরীর সরকারি প্রতিষ্ঠানে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সব সরকারি হাসপাতাল, শিশুসদন ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পরিবেশন করা হচ্ছে উন্নতমানের খাবার।

বিএ-০৪/১৬-১২ (নিজস্ব প্রতিবদেক)