রাজশাহীর উন্নয়নে পাশে এলো পাওয়ার চায়না

মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে রাজশাহীর বিভিন্নখাতে ব্যাপক উন্নয়নে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও চায়নার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ‘পাওয়ার চায়না’ এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। রোববার দুপুরে নগর ভবনের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও পাওয়ার চায়নার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মি. হান কুন চুক্তিতে সই করেন।

এর মাধ্যমে উন্মোচন হলো মাস্টারপ্ল্যানে রাজশাহীর উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার। ৫০ বছর দীর্ঘমেয়াদী মাস্টারপ্ল্যানটি বাস্তবায়ন হতে শুরু করলে পাল্টে যাবে পুরো রাজশাহী মহানগরীর চিত্র।

চুক্তি অনুযায়ী আগামী তিন বছর ৮টি খাতকে সামনে রেখে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করবে পাওয়ার চায়না। প্রতিষ্ঠানটি যেসব কাজ করবে তার মধ্যে পদ্মা নদীরধারে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে সেখানে গড়ে তোলা হবে স্যাটেলাইট টাউন, বিনোদন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থাপনা। হবে বিশ্বমানের বিশেষায়িত হাসপাতাল। ইকোপার্ক, সাইন্সসিটি তৈরি ও হযরত শাহমখদুম বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং টেকনিক্যাল সুবিধাও বাড়ানো হবে।

এছাড়া উন্নয়ন করা হবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সুয়ারেজ ড্রেনেজ ব্যবস্থার। রাজশাহীর পুরো নগর পরিবহন ব্যবস্থার মধ্যে গণপরিবহণ, রাস্তা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার কাজ করে চায়নার ওই প্রতিষ্ঠানটি।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন জানান, গত ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জ্যুয়ো রাজশাহীতে এসে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এরপর তিনি চায়না বৃহত্তর প্রতিষ্ঠান পাওয়ার চায়নাকে রাজশাহীতে পাঠান। তখন রাজশাহীর উন্নয়নে পাওয়ার চায়নাকে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করার অনুরোধ জানানো হয়। তারা সম্মত হওয়ার পর কয়েক দফা আলাপ-আলোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হলো।

মেয়র বলেন, বতর্মানে সিটি কর্পোরেশনের আয়তন ছোট। সিটি কর্পোরেশনের আয়তন প্রায় ৪১০ বর্গকিলোমিটারে সম্প্রসারণ করা হবে। এই বৃহৎ এলাকার মানুষকে নগরের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে চিহ্নিত করা ৮টি খাতকে সামনে রেখে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে দেবে পাওয়ার চায়না।

চুক্তি আওতায় আগামী তিন বছরের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হবে। পরবর্তীতে অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটার পর একটা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী ৫০ বছরের জন্য এই পরিকল্পনা। আজকে রাজশাহীবাসীর ব্রাইট ফিউচারের জন্য নতুন জার্নি শুরু হলো বলেও উল্লেখ করেন মেয়র।

অনুষ্ঠানে পাওয়ার চায়নার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মি. হান কুন বলেন, পাওয়ার চায়না বাংলাদেশ নতুন নয়। ১৯৯০ সাল থেকে বাংলাদেশে কাজ করছে। অনেকগুলো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। আমরা রাজশাহীর সাথে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গেই সব কাজ করব।

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাওগাতুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক। পাওয়ার চায়নার প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন মি. লে.জি, মি. এ্যান্ডু ও ইয়াং শাও।

বিএ-১৮/১২-০৫ (নিজস্ব প্রতিবেদক)