রাজশাহীতে ইটভাটায় মিললো শ্রমিক নেতার মরদেহ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় শ্রমিক নেতা নূরুল ইসলাম (৫৫) খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার জিউপাড়া এলাকার একটি ইটভাটা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বে তিনি খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ স্বজনদের।

নিহত নূরুল ইসলাম জিউপাড়ার হলহলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ছিলেন। এছাড়া জিউপাড়া ইউপির বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্বপালন করছিলেন তিনি।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। ঘন্টাখানিক পর অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্বজনরা জানান, সোমবার রাতে শ্রমিক ইউনিয়ন অফিস থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলেন নূরুল ইসলাম। কিন্তু তিনি বাড়ি ফেরেননি। রাত ৮টার পর থেকে তার মুঠোফোন সংযোগটিও বন্ধ পাওয়া যায়। রাতভর বিভিন্ন এলাকায় খুঁজেও তার সন্ধান পাননি স্বজনরা।

এনিয়ে রাতেই থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে গেলেও নেয়নি পুলিশ। রাতের কোন এক সময় রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁসা উপজেলা সদরের এসএসএ ইটভাটায় তাকে খুন করা হয়। সকালে মরদেহ উদ্ধারের খবর পান স্বজনরা।

নিহত নুরুল ইসলামের বড় মেয়ে নাজমুন নাহারের ভাষ, সম্প্রতি রাজশাহী জেলা সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে তার বাবা সাধারন সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

কিন্তু ভোটে কারচুপি তরে তার বাবাকে পরাজিত দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আবদুর রহমান পটলকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। এনিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন তার বাবা। এরই জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে নব নির্বাচিত এক শ্রমিক নেতা বলেন, ২৫০ ভোটে এগিয়ে ছিলেন নুরুল ইসলাম। নিশ্চিত পরাজয় জেনে ফলাফল ঘোষণাকালে পটলের সমর্থকরা হট্টগোল বাধান। তখন ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।

পরদিন নূরুল ইসলামকে পরাজিত এবং আবদুর রহমান পটলকে বিজয়ী দেখিয়ে ফল ঘোষণা হয়। এই ফল প্রত্যাক্ষাণ করে আদালতে মামলা দায়ের করেন নূরুল ইসলাম। এনিয়ে নূরুল ইসলামের উপর ক্ষুদ্ধ ছিলেন আবদুর রহমান পটল ও তার লোকজন।

পুঠিয়া থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাকিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মরদেহজুড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ইট দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়েছে পুলিশ। এনিয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বজনরা। আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ।

বিএ-০৫/১১-০৬ (নিজস্ব প্রতিবেদক)