রামেক হাসপাতলে নামেই ডেঙ্গু কর্ণার

নামেই ডেঙ্গু কর্ণার খোলা হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। কোন ধরণের বিশেষ প্রশিক্ষণ ছাড়াই সেবা দিচ্ছেন নার্সরা।

এতে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে। তবে সাধ্যমত সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাবার কথা জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রামেক হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতালের ১৭ নম্বর কেবিনে প্রথম ডেঙ্গু কর্ণার চালু হয়। এই কেবিনটি সংক্রামক রোগে আক্রান্তদের জন্য বরাদ্দ। গত দুই দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়ায় পাশের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চালু করা হয় ডেঙ্গু কর্ণার।

এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১ জন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন দুজন। এদের মধ্যে নাটোরের গুরুদাশপুরের সাইদুল ইসলাম (৩২) ২২ জুলাই এবং জেলার গোদাগাড়ীর ফরিদপুরের জিয়াউল হক (২৩) ২৩ জুলাই ভর্তি হয়েছিলেন।

হাসপাতালে সাইদুল ইসলাম জানান, তিনি ঢাকায় একটি রং কোম্পানির কর্মী। সেখানেই তিনি ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হন। চিকিৎসায় ধরা পড়ার পর তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। সুস্থ্য হয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। এর আগে সুস্থ্য হয়ে ফিরে গেছেন আরো রামেক হাসপাতালে আসা চার ডেঙ্গুজ¦র আক্রান্ত রোগী।

তবো এখনো চিকিৎসাধীন শিশুসহ ৫ জন। এরা হলেন-জেলার চারঘাটের ভাটপাড়া এলাকার তাজমুল ইসলাম (৩১), একই উপজেলার সারদা এলাকার শফিকুল ইসলাম (২৭), নাটোরের বড়াইগ্রামের রায়হান আলী (২৪), নগরীর কালিকাপুর এলাকার তিন মাসের শিশু মরিয়ম, বগুড়ার সান্তাহার এলাকার আমজাদ হোসেন (৫৫)।

এদের মধ্যে আমজাদ হোসেনের অবস্থা বেশ গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। বাকিদের অবস্থা ততটা গুরুতর নয়। আক্রান্তরা ঢাকা থেকে ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে রাজশাহীতে এসেছেন।

আমজাদ হোসেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারী। নওগাঁ থেকে সম্প্রতি তাকে ঢাকায় বদলি করা হয়। সেখানে গিয়েই তিনি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন। ধরা পড়ার পর তাকেও চিকিৎসক রামেক হাসপাতালে পাঠান।

রোগীদের অভিযোগ, ডেঙ্গু কর্ণারে চিকিৎসকদের দেখা নেই বললেই চলে। বিশেষ এই কর্ণারে নেই বাড়তি কোন সুযোগ সুবিধাও। নার্সরা কোনরকমে সেবা দিচ্ছেন রোগীদের।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন এই ইউনিটের সিনিয়র স্টাফ নার্স লুৎফুননেসা। বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে রোগীরা এই কর্ণারে আসছেন। প্রতিদিন সকালবেলা এখানে রাউন্ড দিয়ে যান চিকিৎসকরা। তবে জরুরী প্রয়োজনে পাওয়া যাচ্ছেনা তাদের। রোগীদের সেবায় ১২জন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন এখানে।

তিনি আরো বলেন, ১৭ নম্বর কেবিনটি মূলত: সংক্রামক রোগীদের জন্যই বরাদ্দ। এর আগে নিপাহ ভাইরাস আক্রান্তরা এখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন সেখানে ডেঙ্গু কর্ণার খোলা হয়েছে। বিশেষ এই সেবা কার্যক্রমের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ নেই তাদের। তবুও তারা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, রোগী বাড়ায় হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্ণারের আসন বাড়ানো হয়েছে। আরো বাড়ানোর প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে। এখানে সরকারী খরচায় সেবা পাচ্ছেন আক্রান্তরা। ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার কথাও জানান উপপরিচালক।

এদিকে, রাজশাহীতে থেকে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হবার খবর মেলেনি। তবে ডেঙ্গু ঠেকাতে তৎপর নগর কর্তৃপক্ষ। জনসচেতনা বাড়ানোর পাশাপাশি বিশেষ কার্যক্রম শুরু করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

বৃহস্পতিবার সিটির ড্রেনে ড্রেনে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংসে কীটনাশক প্রয়োগ করতে দেখা গেছে কর্মীদের। সকালে এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্যানেল মেয়র সরিফুল ইসলাম বাবু।

বিএ-১৫/২৫-০৭ (নিজস্ব প্রতিবেদক)