তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপন অপসারণের নির্দেশ রাজশাহীর ডিসির

শিক্ষানগরী হিসেবে খ্যাত ক্লিন ও গ্রিন সিটি রাজশাহীতে তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অবৈধ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। তাই তামাকপণ্যের বিক্রয়কেন্দ্রে অবৈধ বিজ্ঞাপন সরবরাহ না করা এবং ইতোমধ্যেই নগরীতে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন অপসারণে তামাক কোম্পানিগুলোর পরিবেশক/সত্বাধিকারী বরারর নোটিশ জারি করেছেন জেলা প্রশাসন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) প্রণয়ন করেছেন। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নির্মুলের ঘোষণা দিয়েছেন।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা ৫ এর (ক), (খ) ও (ছ) অনুযায়ী, তামাকপণ্যের বিক্রয়কেন্দ্রে কোনরকম বিজ্ঞাপন প্রদর্শন, তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়ে প্রলুব্ধকরণের উদ্দেশ্যে এর কোনো নমুনা প্রদর্শন এবং বিক্রয়কেন্দ্রে যে কোন ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, উপরোল্লিখিত ধারার আইন লঙ্ঘনে শাস্তির পরিমাণ অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি, জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল এবং আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির সত্বাধিকারী/পরিবেশককে উদ্দেশ্য করে নোটিশে বলা হয়, শিক্ষানগরী এবং স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে রাজশাহী বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে তামাক ও তামাকদ্রব্যের বিক্রয়কেন্দ্র থেকে অবৈধ বিজ্ঞাপন অপসারণে জেলা প্রশাসন মাঝেমধ্যেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে।

এতদস্বত্ত্বেও আপনার পরিবেশকের কার্যালয় থেকে সরবরাহকৃত অবৈধ বিজ্ঞাপন নগরীর প্রায় সমস্ত তামাকপণ্যের বিক্রয়কেন্দ্রে প্রদর্শিত হচ্ছে যা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের পরিপন্থী। তাই রাজশাহী মহানগরীর সকল তামাকপণ্যের বিক্রয়কেন্দ্রে অবৈধ বিজ্ঞাপন সরবরাহ না করা এবং ইতোমধ্যে প্রদর্শিত সকল অবৈধ বিজ্ঞাপন অপসারণ করতে জেলা প্রশাসনের জারি করা নোটিশে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজশাহীর উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’ রাজশাহী মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে একটি ‘বেসলাইন সার্ভে’ পরিচালনা করেছে। জরীপে নগরীর ২৭৩৬ টি তামাকপণ্যের অধিকাংশ দোকানেই বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলোর অবৈধ বিজ্ঞাপন ও পুরস্কার-প্রণোদনা পাওয়া গেছে।

গত ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর ‘রাজশাহীতে তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপনে সয়লাব, ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্বাক্ষরিত এক নোটিশে তামাক কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে প্রদশির্ত বিজ্ঞাপন অপসারণ করতে বলা হয়েছে।

বিএ-১২/১৯-০৯ (নিজস্ব প্রতিবেদক)