আটক জেলেকে ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে গুলি চালায় বিএসএফ

রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তের পদ্মায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারী জেলেকে ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিলো ভারতীয় সীমান্তরক্ষি বাহিনী (বিএসএফ)।

ব্যর্থ হয়ে তারাই প্রথম বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। জবাবে বিজিবি সদস্যরা পাল্টা গুলি চালায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, পাল্টা গুলিতে এক বিএসএফ জওয়ান নিহত হন। আহত হন আরেক জওয়ান।

এর আগে ওই জেলেকে ছিনিয়ে নিতে বিএসএফের একটি সশস্ত্র টহল দল চারঘাট বিওপির সীমান্ত পিলার ৭৫/৩-এস হতে ৫০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শাহরিয়ার খাল এলাকায় অনুপ্রকবেশ করে।

এর আগে মা ইলিশ রক্ষায় পদ্মা নদীতে চালানো মৎস বিভাগ ও বিজিবির অভিযানে আটকা পড়েন ভারতীয় জেলে প্রণব মণ্ডল। তার কাছ থেকে ৪ কেজি অবৈধ কারেন্ট জালও উদ্ধার করা হয়। তবে প্রণব মন্ডেলের সাথে পদ্মায় নামা আরো দুই জেলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

আটক প্রণব মণ্ডল মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী থানার সাহেবনগর ছিঁড়াচর এলাকার বসন্ত মন্ডলের ছেলে। পরে এনিয়ে মামলা দায়ের করে ওই ভারতীয় জেলেকে চারঘাট মডেল থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।

রাতে বিজিবির রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করা হয়। সেখানে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে চারঘাট বিওপির সীমান্ত পিলার ৭৫/৩-এস হতে ৫০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে শাহরিয়ার খাল এলাকার পদ্মা নদীতে ৩ জন ভারতীয় জেলেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়।

ওই সময় মা ইলিশ সংরক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় মৎস কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পদ্মানদীতে অভিযান পরিচালনা করছিলো বিজিবি। তিন জেলেকে আটক করার চেষ্টা করলে দুজন পালিয়ে যান।তবে এক ভারতীয় জেলেকে জালসহ আটক করে পদ্মার এপারে নিয়ে আসে বিজিবি।

এর কিছুক্ষণ পর ১১৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কাগমারী ক্যাম্পের চার সদস্য স্পীডবোট যোগে অবৈধভাবে শূন্য লাইন পেরিয়ে ৬০০-৬৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। নদীর এপারে বিজিবি টহল দলের নিকট এসে আটক জেলেকে ছাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে বিএসএফ সদস্যরা।

ওই সময় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আটক জেলেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের কথা জানায় বিজিবি। এক পর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা ওই জেলেকে মারধর করে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় বিজিবি সদস্যরা তাদের বাধা দিলে বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে ৬ থেকে ৮ রাউন্ড ফায়ার করে করে।

আত্মরক্ষায় বিজিবি সদস্যরা পাল্টা ফায়ার করলে বিএসএফ সদস্যরা ফায়ার করতে করতে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে।

বিজিবি আরো জানায়, এই ঘটনায় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পদ্মা নদীর চর শাহরিয়ার বাঁধে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় বিএসএফ কমান্ড্যান্ট দাবী করেন, তাদের একজন সদস্য নিহত এবং একজন সদস্য আহত হয়েছেন।

উভয় পক্ষ তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়ে একমত হন। এছাড়াও এ বিষয়ে আরো আলোচনার জন্য খুব শীঘ্রই পতাকা বৈঠক করার বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হন। উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ ভাবে পতাকা বৈঠক শেষ হয়।

বিএ-০১/১৮-১০ (নিজস্ব প্রতিবেদক)