রাজশাহীতে ৯ মাসে আগুনে ক্ষতি ১৯ কোটি টাকা

গত নয় মাসে রাজশাহীতে অগ্নিকাণ্ডে যে ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক মূল্য ১৯ কোটিও বেশি। এই তথ্য জানিয়েছেন রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক আব্দুর রশিদ।

বুধবার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০১৯ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।

সকালে রাজশাহী সদর ফায়ার স্টেশনে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র এএইমএম খায়রুজ্জামান লিটন। আজ বুধবার থেকে আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে এই সপ্তাহ পালন করা হবে ।

ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক আব্দুর রশিদ জানান, এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগে মোট অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে ২ হাজার ৬২৪ টি। এই অগ্নিকান্ডে উদ্ধারে পরিমাণ ৭২ কোটি ৬১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৪৫ টাকা। আর ক্ষতির পরিমাণ ১৯ কোটি ১৮ লাখ ৩২ হাজার ৭০৪ টাকা।

শুধুমাত্র রাজশাহী বিভাগের এটি চিত্র অন্য বিভাগের যদি হিসাব করা হয় তাহলে বছরে অনেক কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে আমাদের দেশের। আর এই ক্ষতিগুলো যাতে না হয় তার জন্য ফায়ার সার্ভিস এন্ড ডিফেন্স এর কর্মরত ফায়ারম্যানরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে বেশির ভাগ অগ্নিকান্ড ঘটে চুলার আগুনে, বৈদুত্যিক গোলযোগে, খোলা বাতির ব্যবহার কারনে। এছাড়াও আরো অনেক কারন আছে বিড়ি সিগারেটের টুকরা থেকেও ভয়াবহ আগুন লাগতে পারে। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে তেমন কেউ সচেতন নয়। তেমনি সবার কাছে ফায়ার সাভির্স এর নাম্বার থাকেনা।

অনেকেই এখনো জানেন না আগুন লাগলে কি করতে হয়। ফলে কোথাও কোন দুর্ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস টিমের পৌছাতে দেরি হয়। যদি তাৎক্ষনাৎ খবর পাওয়া যায় তবে ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমানো সম্ভব। তাই এসব বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্যই এই সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে।

জনসাধারণের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, সচেতনতা ছাড়া অগ্নিকান্ড থামানো সম্ভব নয়। বড় বড় বিল্ডিং এ প্রায়ই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেখানে অগ্নি নির্বাপক কোন ব্যবস্থা থাকেনা। তাই বিল্ডিং নিমার্ণের সময় এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা সবচেয়ে জরুরুী।

তাছাড়া বাসায় অভিঙ্গ ইল্রেকটিশিয়ান দিয়ে নিয়মিত বৈদূত্যিক কেবল ও ফিটিংস পরীক্ষা করতে হবে। এছাড়া বাসা বাড়িতে রান্নার সময় গ্যাসের চুলা জ্বালানের আগে ঘরের দরজা জানালা খুলে রাখতে হবে। অগ্নি নিয়ে সচেতন হলেই কেবল প্রতিবছর ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে।

এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। এই মহৎ কাজকে অর্থ দিয়ে মূল্যায়ন করা যাবে না। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস করেছিল। সে সময় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা
অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন। তাদের এই অবদান জাতি মনে রাখবে।

জেলা প্রশাসক হামিদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহীর অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মিরাজ উদ্দিন আহমেদ ও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহীর সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ফায়ার সার্ভিসের মহড়ার আয়োজন করা হয়। শুরুতে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর মাধ্যমে মহড়ার উদ্বোধন করেন মেয়র। এরপর যেকোন অগ্নিকাণ্ডে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা কীভাবে মোকাবেলা করবেন তার মহড়া প্রদর্শিত হয়।

বিএ-১০/০৬-১১ (নিজস্ব প্রতিবেদক)