রাজশাহীর ৮৬% সরকারি অফিসে লঙ্ঘিত হচ্ছে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন

রাজশাহী শহরের ৮৬ শতাংশ সরকারি অফিসে সরকারের ‘ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০০৫ (সংশোধিত আইন-২০১৩)’ লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এছাড়া ৮০ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫১ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ও ৭৪ শতাংশ রেস্টুরেন্টে দেদারছে লঙ্ঘিত হচ্ছে এ আইন।

বৃহস্পতিবার সকালে উন্নয়ন সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র সম্মেলন কক্ষে ‘রাজশাহী শহরের পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক এক জরিপের ফলাফল উপস্থাপনের জন্য সংবাদ সম্মেলন অনুুষ্ঠিত হয়। সেই সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ এই চার পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের ভয়াবহ এ চিত্র তুলে ধরা হয়।

উন্নয়ন সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র সম্মেলনকক্ষে ‘রাজশাহী শহরের পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক এক জরিপের ফলাফল উপস্থাপনের জন্য এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর গুরুত্বপূর্ণ এই চার পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের ভয়াবহ এ চিত্র তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- গতবছর (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০১৯) ‘এসিডি’র তত্ত্বাবধানে এবং ‘ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস-সিটিএফকে’র সহযোগিতায় ‘রাজশাহী শহরের পাবলিক প্লেসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা’ যাচাইয়ের জন্য ‘ক্রস সেকশনাল’ পদ্ধতিতে একটি বেসলাইন জরিপ পরিচালিত হয়। রাজশাহী শহরের মোট ৭০২টি পাবলিক প্লেসে (১৫৪টি সরকারি অফিস, ১০৫টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ১২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ৩১৬টি রেস্টুরেন্টে) পরিচালিত হয় এই জরিপ।

‘এসিডি’র নির্বাহী পরিচালক সালীমা সারোয়ারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় দৈনিক ‘সোনার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত।

সংস্থাটির মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুলের উপস্থাপনায় এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ, ইংরেজি দৈনিক ‘বাংলাদেশ পোস্ট’ এর রিজিওনাল করেসপন্ডেন্ট ও সিনিয়র সাংবাদিক সরকার শরিফুল ইসলাম ও ‘এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স-আত্মা’র রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক শরীফ সুমন।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই গবেষণার উদ্দেশ্য তুলে ধরেন এসিডির তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোস্তফা কামাল। এসময় পাওয়ার পয়েন্টে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করে বিস্তারিত তুলে ধরেন, ‘এসিডি’র অ্যাডভোকেসি অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম শামীম।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী শতাংশ সরকারি অফিসে ধূমপানের নিদর্শন পাওয়া গেছে, শতাংশ অফিসে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সতর্কতামূলক নোটিশ পাওয়া যায়নি এবং শতাংশ সরকারি অফিসে পানের পিক দেখা গেছে।

সরাসরি ধূমপান হচ্ছে ১৮ শতাংশ, সিগারেট/বিড়ির বাট ৭২ শতাংশ, ছাইদানি ৩ শতাংশ এবং ৪৩ শতাংশ সরকারি অফিসে সিগারেট/বিড়ির গন্ধ পাওয়া গেছে। আইন অনুযায়ী ৪৭ শতাংশ অফিসে সতর্কতামূলক নোটিশ পাওয়া যায়নি। এমনকি ৪০ শতাংশে কোনো ধরনের সতর্কতামূলক নোটিশও দেখা যায়নি। এছাড়া ৭০ শতাংশ অফিসের সীমানা থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়কেন্দ্র পাওয়া গেছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন।

উল্লেখ্য, গত ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরিপের ফলাফল উপস্থাপন নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বেসলাইন এই জরিপের তথ্যচিত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে তিনি পাবলিক প্লেসে ধূমপান করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন।

সেই সাথে তিনি স্কুলের পাশে তামাকপণ্য বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কথাও জানান। পাশাপাশি রাজশাহী সিটিকে ধূমপানমুক্ত করতে তা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন।

বিএ-০৭/১৩-০২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)