ভালোবাসায় সিক্ত মেয়র লিটন

রাজশাহী মহানগরীর অবকাঠামো উন্নয়নে ২ হাজার ৯৩১ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে বিপুল জনসমাগমের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ।

অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি নির্বাচনের আগে বলেছিলাম আপনারা যদি আমাকে ভোট দিয়ে আবারো জয়যুক্ত করেন, এরপর আমার নেত্রী বাংলাদেশের অবিসংবাদী নেত্রী বিশে^র অনতম সফল রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাই, তবে তিনি রাজশাহীর উন্নয়ন-কল্যানে যা চাইবো তিনি তাই দিবেন। ঠিক হলোও তাই।

প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলাম, বললাম আমার একটি প্রকল্প আছে, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন কত কোটি টাকার, আমি বললাম প্রায় তিনি হাজার কোটি টাকার। প্রধানমন্ত্রী বললেন, পাস করে দিবো। প্রকল্প পাসের পর আমি রাজশাহীবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছি।

মেয়র আরো বলেন, এ বছর সারা বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানুষ মুজিববর্ষ পালন করবে। ঠিক সেই সময়ে রাজশাহী বাসীকে প্রধানমন্ত্রী মুজিববর্ষের সেরা উপহার দিলেন। এরচেয়ে সেরা উপহার আর কী হতে পারে? মেয়র বলেন, দীর্ঘ নয়টি মাস ধরে আমরা প্রকল্পটি তৈরি করেছি। রাজশাহীর উন্নয়নে যা যা প্রয়োজন সমস্ত কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমরা এই প্রকল্পের মধ্যে সংযোজন করেছি।

মেয়র বলেন, একনেক সভায় যখন রাজশাহীর প্রকল্প উপস্থাপন করা হলো প্রধানমন্ত্রী সব দেখছিলেন কী কী আছে প্রকল্পে। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বললেন, রাজশাহী খুব পরিপাটি শহর, অনেক ভালো শুনেছি, তবে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য প্রকল্পে কিছু দাওনি কেন? আমি বললাম, মাননীয় নেত্রী আমি ভয়ই পাচ্ছিলাম প্রকল্প এরচেয়ে বড় করবো কিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বললেন, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের একটি প্রকল্প তৈরি করে দাও, তাতে শহরে কোন ময়লা আবর্জনা না থাকে, সেটিও আমি পাস করে দিবো।

মেয়র লিটন আরো বলেন, রাজশাহী হবে উন্নয়নের আলোকবর্তিতা। রাজশাহীকে দেখে বিশে^র মানুষ বলবে, এটিই রাজশাহী, এটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, সবুজ সেরা শহর। আমি রাজশাহীতে এই অবস্থানেই নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য আরো অনেক কাজ বাকি আছে। আপনাদের দোয়া চাই।

মেয়র বলেন, রাজশাহীর প্রতি আমার রক্তের ঋণ আছে। রাজশাহীতে শায়িত আছেন বঙ্গবন্ধুর রক্তবন্ধু শহীদ কামারুজ্জামান। এই জনপদে তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে রাজনীতি করেছেন। তাঁর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করে রাজশাহীর মহানগর আওয়ামী লীগের মাধ্যমে এই পুরো এলাকাকে একত্রিত করে উন্নয়নের পক্ষে রাখতে চাই, দেখিয়ে দিতে চাই এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোন ঠাঁই নেই।

অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মেয়রপত্নী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সমাজসেবী শাহীন আকতার রেনী, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, মাহফুজুল আলম লোটন, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, নাইমুল হুদা রানা, রেজাউল ইসলাম বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, আসদুজ্জামান আজাদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এরপর মেয়রকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পটি অনুমোদন প্রদান করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে মহানগরবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো রাজশাহীর চিত্রই বদলে যাবে, মহানগরীর আরো উন্নত, আধুনিক, বাসযোগ্য, তিলোত্তমা মহানগরীতে পরিণত হবে।

বিএ-১২/২০-০২ (নিজস্ব প্রতিবেদক)