বধূ সুইটির লাশ মিললো ষাট ঘন্টা পর, অভিযান সমাপ্ত

রাজশাহীতে বরসহ কনেসহ নৌকাডুবির ঘটনার ষাট ঘন্টাপর পাওয়া গেলো বধু সুইটি আক্তার পূর্নিমার (২০) লাশ। তিনি পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাট এলাকার শাহিন আলীর মেয়ে। শুক্রবার বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে কনে ফিরছিলেন বাবার বাড়ি। সাথে ছিল তাঁর স্বজনরা। কিন্ত তা হলো না। একদিকে বাতাস, অন্যদিকে স্বজনে ভরা দুটি নৌকার মধ্যে একটির গেছে তলা ফেটে। ওঠতে শুরু করেছে পানি। অপর নৌকাটি অন্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ঘটলো নৌকা ডুবির ঘটনা। এক এক করে উদ্ধার হতে থাকলো লাশ। রোববার সন্ধ্যা অবধি দুদিনের অভিযানে মিলে ৭টি লাশ। কিন্ত মিলেনি বধুর লাশ। অবশেষে সোমবার সকালে রাজশাহীর কাটাখালি এলাকার শাহাপুর নদীর ঘাটে ভেসে উঠে কনের মরদেহ। লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ি জড়ানো রয়েছে পরনেই। তিনি পবা উপজেলার ডাঙ্গেরহাট গ্রামের শাহীন আলীর মেয়ে। রাজশাহী নৌ-পুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেহেদী মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, নববধূ সুইটির মরদেহ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে তাদের এই চারদিনের উদ্ধার অভিযান শেষ হতে যাচ্ছে। পদ্মা নদীতে গত শুক্রবার নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৮জনের মধ্যে কেবল সুইটির লাশ পাওয়া যাচ্ছিল না। সকালে তার লাশ পাওয়ায় অন্য কেউ আর অবশিষ্ট রইল না। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৯ জনে। আর ঘটনার পর বিভিন্নভাবে উদ্ধার হয়ে এসেছেন আরও ৩১ জন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নৌকোডুবির ঘটনার পর শনিবার বিকেল পর্যন্ত নিখোঁজদের মধ্যে ৫ জনের এবং রোববার বিকেল পর্যন্ত আরও দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিন ডুবে যাওয়া দ্বিতীয় নৌকাটি নদীর তলদেশ থেকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে শনিবার দুপুরে অপরটি উদ্ধার করা হয়েছিল। এর পর দুপুরে রুবাইয়া আক্তার স্বর্ণার (১২) মরদেহ উদ্ধার করেন জেলেরা। জাল ফেলা হলে তার মরদেহ উঠে আসে। সে পবার আলীগঞ্জ মোল্লাপাড়ার রবিউল ইসলাম রবির মেয়ে ও কনের ফুপাতো বোন। বিকেলে চারঘাটের টাঙ্গনে নববধূ সুইটির খালা আঁখি খাতুনের (২৫) লাশ পাওয়া যায়। তিনি মহানগরীর ভাটাপাড়া এলাকার আসাদুজ্জামান জনির স্ত্রী।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পদ্মার চরে বৌ-ভাত অনুষ্ঠান শেষে বর-নববধূসহ ৪০জন যাত্রী নিয়ে দুইটি নৌকা কনেপক্ষের বাড়িতে ফিরছিল। ফেরার পথে রাজশাহী মহানগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় দুইটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বর রুমনসহ ৩১ জন শুক্রবার রাতেই জীবিত উদ্ধার হন।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, এখন আর কেউ নিখোঁজ নাই। তাই অভিযান শেষ করে দেওয়া হলো।

এসএইচ-০১/০৯/২০ (নিজস্ব প্রতিবেদক)