পরামর্শের নামে ফোন করে নারী চিকিৎসককে উত্ত্যক্ত

সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে সোমবার উন্মুক্ত করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ১৫ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মোবাইল নম্বর। এরপর থেকেই চিকিৎসা পরামর্শ নিতে ফোন করছেন অনেকেই। কিন্তু ফোনগুলো অন্য রোগ সংক্রান্ত হলেও করোনা বিষয়ে ফোন করেননি কেউই। আবার কিছু ফোন কলে নারী চিকিৎসককে অশালিন কথা বলে উত্ত্যক্তের অভিযোগও পাওয়া গেছে।

তবে অন্য রোগে স্বাস্থ্যসেবা নিতে ফোন করা ব্যক্তিদের নিরাশ করছেন না চিকিৎসকরা বরং তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন ফোনেই।

রজিশাহী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত দুই শতাধিক ব্যক্তি ফোন করে রামেকের করোনা ভাইরাস নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদানের জন্য গঠিত চিকিৎসক কমিটির কাছে। যার অধিকাংশই করোনা সংশ্লিষ্ট নয়।

কমিটির আহ্বায়ক ও মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আজিজুল হক আজাদ জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত তার নম্বরে ফোন করেছেন ১১০ জন। যাদের একজনও করোনা নয় বরং অ্যাজমা, সাধারণ সর্দি, জ্বর, বুকে ব্যথাসহ অন্যান্য সমস্যা নিয়ে কল করেছেন। অনেকে আবার খোশগল্প করার জন্যও ফোন দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

ফোনকল বিষয়ে আরেক চিকিৎসক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের কেউই করোনা সন্দেহে ফোন করেননি। বরং কিছু মানুষ করোনার আতঙ্কে ফোন করছে আর বেশিরভাগই করছেন কৌতুহলে। এছাড়াও অনেকেই করোনা বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য জানার জন্য ফোন করেছেন। ডাক্তাররা আন্তরিকভাবেই তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে করোনা ভাইরাস বিষয়ে পরামর্শ দিতে নিজের ফোন নম্বর উন্মুক্ত করে বিপাকেই পড়েছেন নারী চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন পারভিন। তার অভিজ্ঞতায় বলেন, ২০টি ফোনকল রিসিভ করে মাত্র ৫ জনকে পেয়েছেন যারা কোনো অসুখ নিয়ে কথা বলেছেন। বাকিরা উত্ত্যক্ত করার অভিপ্রায়ে আজেবাজে কথা বলেছেন। বিষয়টি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) অধ্যক্ষকে অবহিত করেছেন বলেও জানান তিনি।

ডা. নাজনীন পারভীন বলেন, তারপরও আমি আমার দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে এক মুহূর্তের জন্যও ফোন বন্ধ করিনি।

অন্যরা কেউই ফোনকলের নির্দিষ্ট সংখ্যার হিসাবে রাখেননি। অন্য ডাক্তারদের মধ্যে জহুরুল হক আনুমানিক ২০টি, সৈয়দ মাহবুব আলম ১০-১২টি, হারুন অর রশীদ ৪-৫টি, আখতারুল ইসলাম ৬-৭টি, নাজনীন পারভীন ২০টি, সেলিম খান ৭-৮টি, আমজাদ হোসেন প্রাং সোমবার ৮-১০টি ও মঙ্গলবার ১৫-১৬টি এবং সিদ্দিকুর রহমান ৩-৪টি ফোনকল পেয়েছেন।

এছাড়াও ডাক্তারদের মধ্যে রকিবুল ইসলাম, মোহাইমেনুল হক, প্রবীর মোহন বসাককে ফোন করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ওয়েটিং পাওয়া গেছে রেজাউল ইসলামের ফোন।

অন্যদিকে মঙ্গলবারের জন্য প্রদত্ত ২টি হটলাইন নম্বরের একটিতে ৮-১০টি ফোনকল এসেছে। আরেকটিতে রাত ৮টা পর্যন্ত কোনকল আসেনি বলে জানা গেছে। এছাড়াও আনুষ্ঠানিকভাবে মোট ফোনকল সংখ্যার হিসাব রাখা হচ্ছেনা বলে জানান চিকিৎসা কমিটি।

বিএ-০১/০১-০৪ (নিজস্ব প্রতিবেদক)