রাজশাহীতে ভেজাল মেয়াদউত্তীর্ণ বালাইনাশকে বাজার সয়লাব

রাজশাহীর পুঠিয়ায় কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে যত্রতত্র গড়ে উঠছে বালাইনাশক বিক্রয়ের দোকান। অভিযোগ উঠেছে অধিকাংশ ডিলারগণ ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ণ বালাইনাশক বিক্রি করে রাতারাতি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে করে স্থানীয় চাষিরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় বিসিআইসি সার ডিলার রয়েছে ৮টি। এর মধ্যে পুঠিয়া ইউপি ও পৌর এলাকায় ২টি এবং শিলমাড়িয়া ইউপিতে দু’টি রয়েছে। অপরদিকে বিএডিসি সার ডিলার হিসেবে রয়েছে আরও ৫টি। এছাড়া ৬টি ইউপি এলাকায় সাব-সার ডিলার হিসাবে ৬৩ জন তালিকাভূক্ত থাকলেও বর্তমানে প্রায় ৪০ জন সাব-সার ডিলার এবং প্রায় ৩শ’ ৫০ জন বালাইনাশক ডিলার রয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার পৌরসভাসহ ৬টি ইউনিয়ন এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাবে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠছে খুচরা সার ও বালাইনাশক বিক্রয় কেন্দ্র। উপজেলা কৃষি কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় ওই ডিলারগণ ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ণ কৃষি উপকরণ বিক্রি করছে। তাদের নিকট থেকে চাষিরা সার ও বালাইনাশক ক্রয় করে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এ সকল ঘটনায় সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করেন একজন চাষি।

ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৬ এপ্রিল উপজেলার মহনপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান। সে সময় মেসার্স হক এন্টার প্রাইজে তল্লাশী চালিয়ে অনেক মেয়াদ উত্তীর্ণ বালাইনাশক জব্দ করা হয়। পরে ডিলার আয়নাল হককে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। সে সময় জব্দকৃত মালামাল গুলো ধংশ করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিসিআইসির সার ডিলার বলেন, কৃষি অফিসের তদারকির অভাবে কিছু অসাধু লোকের সহায়তায় অবৈধ সার-বালাইনাশক বিক্রয়ের দোকান গড়ে উঠছে। তারা অস্তিত্বহীন কারখানা থেকে ভেজাল সার-বালাইনাশক ক্রয় করে বাজারজাত করছে। যার ফলে ওই সার ও বালাইনাশকে ভেজালের পরিমাণ অনেক বেশি।

উপজেলার ধোপাপাড়া-মহনপুর এলাকার জসিম উদ্দীন বলেন, বর্তমানে অধিংশ সার-কীটনাশক ডিলারগন ভালো মানের বলে ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কীটনাশক কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করছে। যা জমিতে একাধিকবার প্রয়োগ করে আমরা কোনো সুফল পাই না।

সাব-সার ডিলারগণ বলেন, বিভিন অনিয়মের কারনে গত কয়েক বছর পূর্বে কৃষি অফিসে ৩০ হাজার টাকা করে জামানত দিয়ে ৬৩ জন সাব-ডিলার তালিকাভূক্ত হয়। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে বর্তমানে উপজেলায় প্রায় শতাধিক অবৈধ সার ও কীটনাশকের দোকান গড়ে উঠেছে। তারাই প্রতিনিয়ত এলাকার সাধারণ কৃষকদের সাথে প্রতারণা করছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, আমাদের অভিযান চলমান। যেখানেই অনিয়ম করা হবে সেখানেই অভিযান চলবে।

বিএ-১০/০৭-০৪ (নিজস্ব প্রতিবেদক)